স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩৫ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২৯
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের আরেকটা হতাশার ম্যাচ! সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত হেরেই গেল বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলিয়ে জিম্বাবুয়েকে ১৭৪ রানের লিড দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার প্রায় একশ রানের জুটি গড়ে সেই কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন। পরে আর জিম্বাবুয়েকে আটকাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ।
সিলেটে শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে তোলে ২৭৩ রান। পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে গুটিয়ে গেলে ১৭৪ রানের লিড দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ের সামনে। সিলেটে এই লিডে যে জয় সম্ভব নয় সেটা কঠোর ভাবেই বুঝিয়ে দিল জিম্বাবুয়ে।
গত দেড় দুই বছর ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হতাশজনক পারফরম্যান্স। তবু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে হারতে হবে এমন ভাবনা হয়তো কারোরই ছিল না। ক্রিকেটারদেরও নয় নিশ্চয়। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে গুটিয়ে গিয়ে ক্রিকেটাররা যেভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলছিলেন তাতে মনে হয়েছে তারা দুইশ’র আগে গুটিয়ে যাওয়াটাকে স্রেফ দুর্ঘটনাই ভাবছেন! কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেও একই হাল। পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছে জিম্বাবুয়ে।
৭ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে হারল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে এই সিলেটেই সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ। ১২ বছরের মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার হারল বাংলাদেশ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৭৪ রানের লিড নিয়ে বোলিং করতে নেমে শুরুতেই উইকেট দরকার ছিল বাংলাদেশের। এতো ছোট লিডে জয় পেতে হলে শুরুতে উইকেট খুবই দরকার। কিন্তু জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার পাত্তাই দিলেন না বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণকে।
ওপেনার বেন কুরান ও ব্রাইন বেনেট প্রথম উইকেটে তোলেন ৯৫ রান। বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে গেছে সেখানেই। মেহেদি হাসান মিরাজ পরে উইকেট এনে দিয়েছেন কিন্তু তার আগে অনেকদূর এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বেন কুরান ৭৫ বলে ৪৪ রান করেন। ব্রাইন বেনেট ৮১ বলে ৫৪ রানে ফিরেছেন।
এই দুজনকেই ফেরানো মেহেদি হাসান মিরাজ পরে খানিক পরপর উইকেট এনে দিয়েছেন। অভিজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ইসলামও পরে উইকেট এনে দিয়েছেন। তবে লক্ষ্য ছোট হওয়ায় জিম্বাবুয়েকে আটকে রাখতে পারেননি দুজন।
বিনা উইকেটে ৯৫ রানে থাকা জিম্বাবুয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের স্পিনে একটা সময় ১৪৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেল। সেখানে কেউ হয়ত অলৌকিক কিছু প্রত্যাশা করছিলেনও। শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি। ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ১৭৪ রান তুলে ফেলে জিম্বাবুয়ে।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন। বাকি উইকেট দুটি তাইজুল ইসলামের।
এর আগে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের থলিতে তখন ১১২ রানের লিড। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন। জাকের আলী অনিক দিন শেষ করেছিলেন ২১ রানে।
এই দুজনের জুটি যেভাবে জমেছিল এবং এই জুটির পর মেহেদি হাসান মিরাজ ছিলেন বলে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জিং একটা লিড পেতে যাচ্ছে। কিন্তু এই ভাবনা সত্য হয়নি। দিনের শুরুতেই ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে সেই ৬০ রানেই ফেরেন শান্ত।
মেহেদি হাসান মিরাজ টিকতে পেরেছেন মাত্র ১৫ বল! দ্রুত রান তুলতে থাকা মিরাজ কাটা পরেছেন সেই মুজারাবানির বলেই। ১৫ বলে ১১ রান করে ক্যাচ আউট হয়েছেন। লেজের ব্যাটারদের কাছ থেকেও পর্যাপ্ত সঙ্গ পাননি জাকের আলী। যাতে ৪ উইকেটে ১৯৪ রানে দিন শুরু করা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত গুটিয়ে গেছে ২৫৫ রানে। জাকের আলী ১১১ বল খেলে ৪টি চার ১টি ছক্কায় ৫৮ রান করন।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের আসল সর্বনাশটা করেছেন জিম্বাবুয়ান পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি। ৭২ রান খরচায় একাই ৭ উইকেট নিয়েছেন মুজারাবানি।
banglanewsbdhub/এসএইচএস