
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই নতুন করে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। দেশটি দীর্ঘ মন্দার পরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত। কিন্তু সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা দেশটির অর্থনীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
২০২৩ সালে পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রায় কোনো উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়নি। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত হ্রাস এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অর্থনীতি হোঁচট খায়। ২০২৪ সালে দেশটি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এই হার ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে আশা ছিল। তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় সেই সম্ভাবনা আবার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এডিবি পূর্বে যে প্রবৃদ্ধির আশা করেছিল তা নির্ভর করছিল বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর, যার পেছনে ছিল সংস্কারমূলক পদক্ষেপ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও স্থিতিশীল মুদ্রাবাজারের ভূমিকা। কিন্তু বর্তমানে সেই হিসাব বিঘ্নিত হয়েছে।
এদিকে, সীমান্ত সংঘাতের কারণে পাকিস্তানি রুপি দুর্বল হয়ে পড়েছে, শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা স্পষ্ট।
বিশ্বখ্যাত রেটিং সংস্থা মুডিজ সতর্ক করেছে, দীর্ঘমেয়াদি উত্তেজনা সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে ও পাকিস্তানের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের পথ আরও কঠিন করে তুলবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে, যেখানে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের (৫২০ কোটি পাউন্ড) পুনরুদ্ধার প্যাকেজের পরবর্তী কিস্তি অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে পাকিস্তান একটি বড় ধরনের সামরিক উত্তেজনা বহন করার মতো আর্থিক অবস্থায় নেই। সংঘাত অব্যাহত থাকলে তা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করবে।