সরকারি চাকরির প্রলোভনে সমন্বয়ক পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি, অডিও ফাঁস – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



ফেনী জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে সমন্বয়ক পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে নাহিদ রাব্বি নামে এক তরুণের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২০ জুন) স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে। চাকরিপ্রত্যাশী যুবকের নাম হৃদয়। তিনি পরশুরাম পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সবশেষ বুধবার রাতে হৃদয়ের কাছে চাঁদা দাবির ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়।অভিযুক্ত নাহিদ রাব্বি পরশুরাম পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোলাপাড়ার বাসিন্দা ও রেলওয়ে কর্মচারী নুর নবীর ছেলে।

ফাঁস হওয়া ওই অডিওতে শোনা যায়, চাকরিপ্রত্যাশীর কাছে পরীক্ষার একদিন আগে (বৃহস্পতি বারের মধ্যে) নাহিদ ৪ লাখ টাকা ও মূল সার্টিফিকেট দিতে বলেন। ওই চাকরিপ্রত্যাশী রাব্বিকে বলেন, ‘আচ্ছা তাহলে বাড়িতে কথা বলে আপনারে জানাবো। আপনি মোট ১০ চাচ্ছেন নাকি? অর্থাৎ ১০ লাখ লাগবে এইতো? এমনে আর এক, দুই-লাখ কমানো যাবে না ভাই?’ এ সময় রাব্বিকে বলতে শোনা যায়, ‘আর এক পয়সাও কমানো যাবে না’।

জবাবে চাকরিপ্রত্যাশী বলতে থাকেন, ‘আমি বাজারে। বাড়ী গিয়ে আব্বুর সঙ্গে কথা বলে আপনাকে জানাচ্ছি।’ এ সময় নাহিদ রাব্বি বলেন, ‘প্রথমে তুই চার দিয়ে … আমি তার সঙ্গে কথা বলে দেখি। প্রথমে একটা অ্যামাউন্ট না দিলে তো উল্টে যাবে। স্ট্যাম্প (দলিল) করা হবে৷ তোরে স্ট্যাম্প দিয়ে দিবে। আমার হাতে থাকবে সব। আমার মাধ্যমে কাজ করবে।’

এ সময় চাকরিপ্রত্যাশী বলে, ‘ভাই উল্টিবে না; আপনি ওই ভাবে করে দেন। তখন নাহিদ রাব্বি বলে ওঠে ‘সে ভালোবাসা বাংলাদেশে নাই।’ এরপর চাকরি প্রত্যাশী সময় চাইলে, এ সময় তাকে না, না বলতে শোনা যায়। তখন পৌরসভার কত নাম্বার ওয়ার্ডে পড়ছে জিজ্ঞেস করলে চাকরি প্রত্যাশী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পরিচয় দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়েত বিন করিম বলেন, ‘ওই রেকর্ড আমরা পেয়েছি। দুইজনের তথ্যই পেয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন।’ এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘এখানে কোনো অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। যারা লেনদেন করতে চাচ্ছে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে৷ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মেধার ভিত্তিতে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’

ওই চাকরিপ্রত্যাশী হৃদয় অভিযোগ করে বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আন্দোলন সংগ্রামে না থেকেও বিভিন্ন সময় এনসিপি নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। মূলত তার মুখোশ উন্মোচন করতেই আমি এই কায়দা বেছে নিয়েছি। চাঁদাবাজির অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনায় আমি পরশুরাম থানায় মামলা করেছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাহিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি দাবি করেছেন, ফাঁস হওয়া অডিওটি এআই দিয়ে তৈরি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম বলেন, ‘ফেনীতে বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল কোনো সমন্বয়ক কমিটি নেই। কেউ এই পরিচয় ব্যাবহার করে দুর্নীতি করতে চাইলে সে দায়ভার আমাদের নয়।’

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নরুল হাকিম বলেন, এই বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে সত্যতা মিললে এটি মামলা আকারে রেকর্ড করা হবে।

  • টাকা
  • দাবি
  • প্রলোভন
  • সমন্বয়ক পরিচয়
  • সরকারি চাকরি
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।