
‘গোপালগঞ্জ থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায়’ আসা দুই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত দুজন হলেন সুমন বিশ্বাস ও রমজান মুন্সী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, আহত যুবকদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত সুমন বিশ্বাসের মা নিপা বিশ্বাস জানান, তার ছেলে কোমল পানীয় সরবরাহের একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। সেই কাজে গাড়িতে করে মাল নিয়ে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার শিশু বন এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সুমনের হাতে ও কোমরে গুলি লেগেছে।
অন্যদিকে রমজান মুন্সীর ভাই ইমরান মুন্সী বলেন, রমজান অটোরিকশা চালান। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার ডান হাতের কব্জির ওপর এবং ডান বগলে গুলি লেগেছে।
বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর এসেছে।
এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই গোপালগঞ্জ শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়।
বুধবার সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এসবের মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে নেতারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের হামলা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ পরিস্থিতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে তারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে পুলিশ সুপার কার্যালয় ছাড়েন।
দুপুরে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যায় কারফিউ জারির ঘোষণা আসে।