বাড়ির সামনে সম্মেলন করলেন বিএনপি নেতা – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



বরিশালের উজিরপুর ও বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা। উপজেলর আহ্বায়ক সরদার সরফুদ্দিন সান্টুর বাড়ির অদুরে তার মালিকাধীন কমিউনিটি সেন্টারে রোববার বানারীপাড়া বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।  কাল সোমবার উজিরপুরের সম্মেলন হবে।

দলটির একপক্ষের অভিযোগ, উজিরপুরে নিজের সভাপতি পদ দখলে রাখা এবং বানারীপাড়ায় অনুগতদের নিয়ে কমিটি গঠন নিশ্চিত করতে সান্টু তার বাড়ির সামনে সস্মেলন করছেন। বাড়ি থেকে আনুমানিক ৩০০ মিটার দূরে সান্টুর মালিকানাধীন বায়তুল ভিউ কনভেশনে দুই উপজেলার সম্মেলন হবে। তাছাড়া সান্টু উপজেলার সভাপতি প্রার্থী হয়ে দলের ‘এক নেতা এক পদ’ নীতিও ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নেতাকর্মীরা। সান্টু অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, তিনি গায়ের জোরে বাড়ির সামনে সম্মেলন করছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেতা সরফুদ্দিন সান্টু আগামী নির্বাচনে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। ২০০৮ ও ২০১৮ এর নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী ছিলেন। ৫ আগষ্টের পর তিনি দুই উপজেলায় বিএনপির একক আধিপত্যের নেতা। এর আগে অবশ্য বিদেশে অবস্থান করেছেন।

বানারীপাড়া উপজেলার সম্মেলন উজিরপুরের গুঠিয়ায় হবে-এ নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সান্টুর ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছে না। তবে এ আসনে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী বানারীপাড়ার সন্তান কর্নেল (অব.) সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের জন্মস্থান বানারীপাড়ার ঐতিহ্য রয়েছে। সম্মেলন করার জন্য চাখার কলেজের বড় অডিটোরিয়ামসহ অনেক বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। স্থান সংকটের অজুহাত দেখিয়ে এ উপজেলার সম্মেলন আরেক উপজেলায় হওয়া ঠিক না।

অপরদিকে সম্মেলনের স্থান নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন উজিরপুর উপজেলার দুই সভাপতি প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান কাওসার মজুমদার ও মো. ইমদাদুল হক মিলন কাজী। তাদের অনুসারী কয়েকজন নেতা সম্মেলনের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে জেলা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন; যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।

কাওসার মজুমদার ও মিলন কাজী বলেন, উজিরপুরের সন্ধ্যা নদীর দক্ষিণের একমাত্র ইউনিয়ন গুঠিয়া। ইউনিয়নটি বানারীপড়া উপজেলার সীমানা। অপরদিকে উত্তর পাড়ে পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন। উত্তরের শেষ সীমানা রাজাপুর গ্রাম থেকে গুঠিয়ার সম্মেলন স্থনে পৌছতে ৫০ কিলোমিটারে বেশি সড়কপথ ঘুরতে হয়। তাছাড়া সান্টু সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় তাঁর বাড়ির সামনে সম্মেলনে প্রভাব বিস্তারের ঝুকি রয়েছে। তাদের সকলের দাবি উপজেলা সদরের মধ্যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সম্মেলন হোক।

এই দুই প্রার্থীর অভিযোগ, সোমবার সম্মেলন, অথচ শনিবার পর্যন্ত তারা ভোটারের তালিকা পাননি। তারা বলেন, সান্টু ভাই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিসদস্য ও জেলা (দক্ষিণ) কমিটির এক নম্বর সদস্য। এরপরও তিনি উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। অথচ দলের নিয়ম অনুযায়ী এক নেতার এক পদ থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এবং উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরফুদ্দিন সান্টু চটে গিয়ে বলেন, ‘সম্মেলন নিয়ে মতপার্থক্য থাকলে থাক। আমার গায়ে জোর আছে তাই গুঠিয়ায় বাড়ির সামনে সম্মেলন করতেছি। এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলবো না।’

জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান বলেন, ‘সম্মেলন করার জন্য দুই উপজেলায় উপযুক্ত স্থান পাওয়া যায়নি। তাই গুঠিয়ায় করা হচ্ছে। সেটা সান্টুর বাড়ির মধ্যে হচ্ছে না। তিনি কেন্দ্রে ও জেলার সদস্য। এগুলো কোন পদ না’।
বরিশাল জেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হোসেন খান বলেন, উজিরপুর, বানারীপাড়ার ভেন্যু তাঁরা নির্ধারন করেছেন। সান্টু ভাই যে সদস্য পদে আছে তা কোন পদই না। তাই তিনি উপজেলা সভাপতি হতে ইচ্ছুক।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, উজিরপুর এবং বানারীপাড়ায় সম্মেলনের জন্য মানসম্মত ভেন্যু নেই; যে কারনে ওখানে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা সব প্রার্থীকে দেওয়ার নির্দেশ করেছেন। কেন এখনও দেওয়া হয়নি তা জানতে চাইবেন জেলার নেতাদের। কুদ্দুস বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক নেতার এক পদ থাকতে হবে। সান্টু ভাই যেহেতু অন্য দুটি পদে কেবল সদস্য যে কারণে তিনি উপজেলা সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তাছাড়া সান্টুর সামনে তেমন প্রার্থীও তারা পাচ্ছেন না। এরপরও সম্মেলন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে।

গায়ের জোরে সম্মেলন করা নিয়ে সান্টুর মন্তব্য প্রসঙ্গে আকন কুদ্দুস বলেন, ওনার বয়স হয়েছে অনেক। হয়তো এটা তাঁর মনের কথা না।

  • বাড়ি
  • বিএনপি নেতা
  • সম্মেলন
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।