
শতাধিক সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এতে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলেছে, জনগণের করের টাকায় এত বড় প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কী বার্তা দিচ্ছে, তা জানা জনগণের অধিকার। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এই হতাশা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে জাতিসংঘ অধিবেশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অতিরিক্ত প্রতিনিধিদল পাঠানো এক প্রকার স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছিল। কখনও কখনও সেই সংখ্যা দুই শতাধিক পর্যন্ত পৌঁছেছিল। অথচ ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার থেকে জনগণ আশা করেছিল- এ ধরনের চর্চা বন্ধ হবে।’
তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার অহেতুক বিদেশ সফর ও সরকারি অর্থ অপচয় রোধে পরিপত্র জারি করেছিল। কিন্তু জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে শতাধিক প্রতিনিধি পাঠিয়ে সরকার নিজেই তার অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
টিআইবি জানায়, সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মতো বড় শক্তিধর দেশগুলো কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য তুলনামূলক বড় প্রতিনিধি দল পাঠায়, যদিও শতাধিক সদস্যের দৃষ্টান্ত বিরল। অপরদিকে নাইজেরিয়ার মতো কিছু সুশাসনবর্জিত দেশের বড় দল পাঠানোর পেছনে ‘ভ্রমণবিলাস’ ছাড়া তেমন কোনও যুক্তি পাওয়া যায় না।
গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার ৫৭ জনের প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ বছর সেই সংখ্যা কমবে বলে তারা আশা করেছিলেন। কিন্তু এবার পশ্চাৎমুখী হয়ে কর্তৃত্ববাদী আমলের বিব্রতকর চর্চা পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, এত বড় প্রতিনিধি দল গঠনের সময় অধিবেশনের আলোচ্য বিষয়বস্তুর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, জাতীয় স্বার্থে অর্থবহ অংশগ্রহণ বা সদস্যদের ভূমিকা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে? জনগণের করের টাকায় গঠিত দলের প্রতিটি সদস্যের দায়িত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে কি স্পষ্টতা আছে?
গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টান্ত হতাশাজনক ও বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছে টিআইবি।