‘আমার কেন শত্রু হবে?’ পরীমণির স্মার্ট জবাব

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

চিত্রনায়িকা পরীমণি — বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল অথচ বিতর্কিত নাম। আলো, ক্যামেরা আর সমালোচনার ভেতর দিয়েই কেটেছে তার পথচলা। সম্প্রতি এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে এসে তিনি শেয়ার করেছেন এক অজানা, ব্যক্তিগত ও গভীর অভিজ্ঞতা—রিমান্ডের দিনগুলো নিয়ে।

রিমান্ডে একটাই প্রশ্ন

মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে ছিলেন পরীমণি। সেই কঠিন সময়ে তাকে একটিই প্রশ্ন বারবার করা হয়েছে—

‘আপনার কি কোনো শত্রু আছে? কাউকে শত্রু মনে করেন?’

তিনি জানান, একাধিক সংস্থা, বিশেষ করে সিআইডি, তাকে এই প্রশ্নটি পুনরায় পুনরায় করেছে। পরীর কণ্ঠে বিস্ময়:

‘আমি তো কারও সঙ্গে মাথা ফাটাইনি, গালাগাল করিনি, জমি দখল করিনি। তাহলে আমার শত্রু হবে কেন?’

‘আমার কোনো শত্রু নাই’

রিমান্ডের সেই সময়ের কথা বলতে বলতে তিনি যেন ফিরে গেলেন নিজের ভেতরের মানুষটির কাছে।

‘আমি আসলে কাউকে শত্রু ভাবতে পারিনি। কারণ আমি কারও ক্ষতি করিনি। শত্রুতা হওয়ার তো একটা কারণ লাগে, তাই না?’

তার কণ্ঠে তীব্র আত্মবিশ্বাস, তবে সাথে একরাশ প্রশ্নও—সমাজের মানুষের চোখে সে কেন যেন সবসময় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।

আলো ও অন্ধকারের মাঝখানে পরী

বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় মুখ হলেও পরীমণি সবসময়ই ছিলেন আলো ও অন্ধকারের মাঝখানে। তার ক্যারিয়ার যেমন রঙিন সাফল্যে ভরা, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনও বিতর্কে আলোচিত।

তবে এই সাক্ষাৎকারে যেন এক নতুন পরীকে দেখা গেল—আরও শান্ত, আত্মজিজ্ঞাসামূলক এক নারী, যিনি অতীতের ঝড় পেরিয়ে নিজেকে বুঝতে শিখেছেন।

‘আমি তো কারও সঙ্গে কিছু করিনি’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি একটা নামও বলতে পারিনি। কারণ আমার চোখে কেউ শত্রু না। আমি তো কারও সাথে এমন কিছু করিনি যে সে আমার শত্রু হয়ে যাবে।’

এই বাক্যেই যেন লুকিয়ে আছে তার মানবিক দিক। জীবন তাকে যতই ধাক্কা দিক, পরী এখনো কাউকে ঘৃণার চোখে দেখেন না।

সমাজের চোখে নারী ও ‘শত্রুতা’

পরীমণির এই বক্তব্য শুধু তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং আমাদের সমাজে একজন সফল নারীকে ঘিরে তৈরি করা অবিশ্বাস ও শত্রুতা সংস্কৃতির প্রতিফলন।
একজন নারী যখন নিজের শর্তে বাঁচতে চান, তখন তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, তার চারপাশে সন্দেহ ছড়ানো হয়।

পরী সেই ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে আজ বলেন—
‘আমার কেন শত্রু হবে?’
এই প্রশ্নে লুকিয়ে আছে এক গভীর প্রতিরোধ—নারীর প্রতি অবিশ্বাসের বিরুদ্ধে।

নতুন পরী, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি

পডকাস্টে পরীমণিকে দেখা গেছে আগের চেয়ে পরিণত ও আত্মবিশ্বাসী রূপে। তিনি এখন নিজের ভেতরের শান্তি খুঁজছেন, ছায়ার মধ্যেও আলো দেখতে শিখেছেন।
তার জীবনের প্রতিটি ঝড় যেন আজ তাকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে।

শেষ কথা

বাংলা চলচ্চিত্রের এই সাহসী নায়িকা হয়তো অনেক ঝড় পেরিয়েছেন, অনেক সমালোচনা শুনেছেন।

তবু আজ তিনি নিজের মতো করে বলেন—
‘আমার কোনো শত্রু নাই। আমি শুধু নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করি।’

পরীমণির এই কথাগুলো শুধু এক অভিনেত্রীর অভিজ্ঞতা নয়, বরং এক নারী মানুষের নিজেকে বোঝার, ক্ষমা করার এবং এগিয়ে যাওয়ার গল্প।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।