
গত ৯ মাসে ৯৯৩ কন্যাশিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে। মহিলা পরিষদের নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনবিষয়ক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৩৫০ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শুধু সেপ্টেম্বরেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২৯ জন, যাদের বয়স শূন্য থেকে ১৮ পর্যন্ত ধরা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২ হাজার ২৩৭ নারী ও কন্যাশিশু বিভিন্নভাবে নির্যাতন এবং সহিংসতার শিকার হয়েছে।
এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ২২৪ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। অন্যদিকে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম পরিচালিত কন্যাশিশুর ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার চিত্র পর্যবেক্ষণবিষয়ক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে করুণ চিত্র। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট—এই ৮ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ২২৪ কন্যাশিশু। ২০২৩ সালে একই সময়ে সেই সংখ্যা ছিল ৪৯৩ জন।
ধর্ষণ বা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ১৫ শিশু খুন হয়েছে, আত্মহত্যা করেছে ৫ জন। এ ছাড়া গত ৮ মাসে ১৩৪ কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। গত বছরের একই সময়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল ৩২ কন্যাশিশুকে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বরাতে প্রতিবেদনে ৮৪টি আলোচিত ধর্ষণ মামলার ভিকটিম এবং ধর্ষণের ঘটনার বাদী ও বিবাদীর সাক্ষাৎকারভিত্তিক তথ্য তুলে ধরা হয়। তাতে বলা হয়, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালে সংঘটিত ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের ২০ দশমিক ২৩ শতাংশ মাদকাসক্ত, ২৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। আর ভুক্তভোগীদের
৭২ দশমিক ৬১ শতাংশ শিশু ও শিক্ষার্থী। অনেক ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর আত্মীয় ও পরিচিত। এ ছাড়া অধিকাংশ ভুক্তভোগী অতি দরিদ্র পরিবারের।
১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস। দিবসটি সামনে রেখে এ বছর একাধিক সংকটের মুখে মেয়েদের নেতৃত্বের স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। ইউনিসেফের তথ্যমতে, গত ৩০ বছরে কৈশোর বয়সী মেয়েদের জীবনে কিছু অগ্রগতি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের প্রায় সবখানে তাদের অধিকার এখনো লঙ্ঘিত হচ্ছে। ইউনিসেফ আরও বলেছে, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী কন্যা ও তরুণীদের শিক্ষাব্যবস্থা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণে না থাকার আশঙ্কা ছেলেদের তুলনায় দ্বিগুণ।