
২০২৪-২৫ অর্থবছরের পুরো সময়ই বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা ছিল নিম্নমুখী। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও সেই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ছিল ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। জুন পর্যন্ত লক্ষ্য ছিল প্রায় ১০ শতাংশ, কিন্তু বাস্তবে অর্জন হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশের মতো। সরকারি খাতেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঋণ কিছুটা কম হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাইয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ হলেও সরকার পতনের মাস আগস্টে তা কমে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়। পরের মাসে আরও কমে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ হয়, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অক্টোবর মাসে আরও কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে। এরপর নভেম্বর ও ডিসেম্বরের হার যথাক্রমে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। জানুয়ারিতে তা আরও কমে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়। ফেব্রুয়ারিতে তা ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে নামে। মার্চে তা কিছুটা বেড়ে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ হলেও এপ্রিলে তা কমে হয় ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। মে মাসে তা আরও কিছুটা কমে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ হয়। জুনে ছিল ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ছিল ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।
এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা এ বি আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখনো সন্তোষজনক না হওয়ায় বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে ঋণের চাহিদাও বাড়ছে না। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ অনেক দিন ধরেই জিডিপির আনুপাতিক হারে ২২-২৩ শতাংশের সীমায় ওঠানামা করছে। এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে বিনিয়োগ স্থবিরতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। এতে উৎপাদন হবে না, সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানও হবে না। ফলে সরকারের যে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটাও অর্জিত হবে না।