বাংলাদেশের ছাত্রদের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোটা দূর করা, যেখানে ছড়িয়েছিল চাকরির নামে দালালি। শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিদের সুবিধা দেয়া হতো, বাকি ৯৮% শিক্ষার্থীদের উপর এক ধরনের নির্যাতন করা হতো।

এর মধ্যে ছিলঃ চাকরির নামে শিক্ষার্থীরদের কাছ থেকে বিপুর পরিমাণ অর্থ নেওয়া। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কথা না শুনলে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া। চাকরির আগে বড় অঙ্কের অর্থ দাবি করা। যেটি যেত বড় বড় সরকারি কর্মকর্তা সহ,  স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে।

এর ফলে বাংলাদেশে বেড়ে গিয়েছিল দুর্নীতি, যখন একটা শিক্ষার্থী বিপুল পরিমাণ অর্থ ধার করে বা ঋণ নিয়ে যে কোন চাকরিতে যোগদান করে, তখন তার লক্ষ্য থাকে সে ঋণ পরিশোধ করার। এর ফলে সে ওই খাতে বা ওই কর্মস্থানে দুর্নীতি শুরু করে। এতে দেশের অর্থনীতি সহ বিভিন্ন কর্মখাতে দুর্নীতি বেড়ে যায়।

উদাহরণস্বরূপঃ

যখন একজন শিক্ষার্থী যোগদান করতে চায় পুলিশ বাহিনীতে বা যেকোনো সরকারি চাকরিতে। তখন দেখা গেছে অনেক  শিক্ষার্থীর কাছে  সরকারি কর্মকরত বড় বড়  দালালরা বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করত।

যেহেতু বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারই মধ্যবিত্ত বা গরীব, সেহেতু একটি পরিবারের বিপুল পরিমাণ অর্থ দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে ।

তবুও সরকারি চাকরির আশায় বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি  হত শিক্ষার্থীরা। পরিশেষে দেখা যায় ধার শোধ করতে গিয়ে পুলিশ চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম চালিয়ে যায়। শুধু পুলিশ নয় বাংলাদেশের অনেক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িয়ে যায়।

এছাড়াও  দেখা গেছে  চাকরি বাঁচাতে তাদের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কথা শুনতে বাধ্য করা হতো। তাদের একটা বড় সমস্যা ছিল কথা না শুনলে চাকরি চলে  যেত।

এর ফলে নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তা অমানবিক কাজে লিপ্ত থাকতো, যেমনঃ ভোটের সময় প্রত্যেক বাড়িতে নজর রাখা কে কাকে ভোট দিবে তা নির্ধারন করা,  নিরহ মানুষের বুকে গুলি করা, চাঁদাবাজি করা, গুম করা, স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদেরকে গুম বা নির্বিচারে হত্যা করা ইত্যাদি।

এর ফলে শুধু পুলিশ নয়, প্রায় সকল বাংলাদেশী সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে দেখা যায় অমানবিকতা

এর মূলে ছিল, স্বৈরাচারী সরকারের বড় বড় মন্ত্রীদ্বয়। বাংলাদেশের সকল মন্ত্রী, বাংলাদেশের সকল সরকারি কর্মকর্তাকে নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের কথা না শুনলে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হত।

এবং পুনরাই নতুন কর্মকর্তা্র কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে আবার চাকরিতে নিয়োগ দিত, এটাই ছিল মূল লক্ষ্য।

দেখা গেছে শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুলোও  একই নিয়ম ফলো করে বিপুল পরিমাণ অর্থের দাবি করতো।

সব থেকে বড় সমস্যা হলোঃ এর ফলে যোগ্য শিক্ষার্থী বা ব্যক্তি যোগ্য জায়গায় স্থান পেতো না।  দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত ছিল।

এমনও আমরা দেখেছি শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট ছিড়ে ফেলতে। 

একটি স্বৈরাচার কখন তৈরি হয়, যখন কোনো দেশে দীর্ঘ সময় ধরে একটি সরকারের হাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে থাকে। যেমনটি নিয়ন্ত্রণ করছিল শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৫ বছর বা তার বেশি। দেশের শিক্ষা, অর্থনীতি সহ বড় বড় খাতগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ এর পরিমান প্রায় ১৮ লাখ কোটি টাকা। হিসাব করলে বাংলাদেশে জন্মরত শিশুসহ বা বৃদ্ধ সকলেই ঋণী।   

এজন্য আমাদের উচিত সরকারি সকল খাদগুলোকে নিরপেক্ষ করা। এর অর্থ হলো, কোন কর্মকর্তা কোন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার, বা মন্ত্রীর কথাই দেশের মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজ করবে না।

এর মানে এই নয় যে তারা উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কথা শুনবে না, যেটির দেশের বা মানুষের জন্য ভালো নয় সে কথাগুলো  থেকে বিরত থাকবে, সে যত বড় উচ্চ কর্মকর্তা বা মন্ত্রী হক। যদি  চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেখায়, তাহলে মিডিয়ার সাহায্যে নিবে। এক কথায় যেকোনো অমানবিক আদেশ হলেই মিডিয়ার সাহায্য  নেওয়ার জন্য আহব্বান সকল মানুষকে।

বর্তমান সংবাদ ব্যবস্থা গুলো অনেক শক্তিশালী, এজন্য আমাদের সকলের উচিত সকল কর্মকর্তার দিকে নজর রাখা, এবং দেশের মুসলিম, হিন্দু, বদ্ধ, খ্রিস্ট্রনসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা সহ সকল সুবিধা দেয়া।

আর এই দালাল গুলোর যত দ্রুত সম্ভব বিচার করা।

শান্তির বার্তাঃ মিডিয়া আরো শক্তিশালী হন, দেশে শান্তি আসবে, দরকার হয় মিডিয়ায় কর্মচারী বাড়ান, প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের বা মানুষের কাছ থেকে তথ্য নিন, দেশের প্রতিটি কেন্দ্রের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন।

(মনে রাখবেঃ  শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ড এবং শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতীর মেরুদন্ড গড়ার কারিগর)

 (রনি মিয়া)