আজ মঙ্গলবার, আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ বছর আলিমে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী। এটি আমাদের দেশের শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি দারুণ সাফল্য।
এর আগে, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করা হয়। সকাল ১১টার দিকে, সব শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল একসঙ্গে ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে, এই বছর সব বোর্ডের গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ও অনলাইনে ফলাফল দেখতে পারেন।
এবারের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩০ জুন। কিন্তু, এই পরীক্ষার মধ্যে কিছু বাধা আসায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় এবং কিছু পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে, ১১ আগস্ট এবং ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে, কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করায়, শিক্ষা বিভাগ স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয়।
এসময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যেসব বিষয় পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ফলাফল এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। বিষয় ম্যাপিংয়ের একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পাবেন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ৮৮ হাজার ৬১৪ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৮৫ হাজার ৫৫৮ জন পরীক্ষায় বসেছিলেন। ছাত্রদের মধ্যে ৪৬ হাজার ৪৩৩ জন এবং ছাত্রীদের সংখ্যা ৩৯ হাজার ১২৫ জন। দেখা যাচ্ছে, জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার ৭৫৩ জন এবং ছাত্রের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০৮ জন।
এ বছর যেভাবে পরীক্ষা পরিচালিত হয়েছে, তা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বড় পরীক্ষার বিষয় ছিল। যদিও পাসের হার কিছুটা কমেছে, তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আলিম পরীক্ষায় ৯৬১৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এটি একটি আশাব্যঞ্জক চিত্র।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারের দিক থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড শীর্ষে রয়েছে। এটি আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার একটি ইতিবাচক প্রতিফলন। অন্যদিকে, ময়মনসিংহ বোর্ড এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে, যেখানে পাসের হার মাত্র ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
এ বছর কারিগরি বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৮২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে, যেখানে ৮৮ দশমিক ০৯ শতাংশ পাস করেছে। এটির মাধ্যমে বোঝা যায়, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বিভিন্ন স্তরের উন্নয়ন ঘটছে।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় এই বছরের পাসের হার গত বছরের ৯০.৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৩.৪০ শতাংশ হয়েছে। এর মানে হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা আরও বেশি সফলতার সঙ্গে পরীক্ষা পাশ করছে। ছেলে-মেয়ে উভয়ের মধ্যে পাসের হার তুলনা করলে, দেখা যাচ্ছে, ছাত্রীদের পাসের হার একটু বেশি।
সব মিলিয়ে, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরিশ্রম, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতা এবং অভিভাবকদের সমর্থন সবকিছু মিলিয়ে একটি ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সকলের উচিত এই পরিবেশকে আরও ভালো করার চেষ্টা করা।
আজকের এই ফলাফল আমাদের জন্য একটি উৎসাহের বার্তা। শিক্ষার্থীরা যেভাবে নিজেদের গড় নিয়ে কাজ করছে, তাতে আমাদের দেশ আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই শিক্ষার আলোকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করি।
বাংলা নিউজ বিডি হাব/ জান্নাতুল ফেরদৌস মিরা