শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, সংস্কার প্রয়োজন

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

ঢাকায় আজ দুপুরে একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশি কূটনীতিকদের সামনে প্রথম ব্রিফিং প্রদান করেছেন। এই ব্রিফিংয়ে তিনি দেশের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।

দেশের পরিস্থিতি ও শেখ হাসিনার শাসন

ড. ইউনূস বলেছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তার মতে, শেখ হাসিনার শাসনকালে দেশের বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যম সবই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, “আমি এমন একটি সময়ে দায়িত্ব নিয়েছি, যখন দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা ও অনিশ্চয়তা রয়েছে। শেখ হাসিনার শাসন দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। এখন প্রয়োজন আমাদের বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। এরপর একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা হবে, যাতে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারে।

তিনি বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে সমর্থন চেয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বীর ছাত্রদের প্রতি শ্রদ্ধা

ড. ইউনূস বলেছেন, “আমি সেই বীর ছাত্রদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই, যারা নিজের জীবনকে বিপন্ন করে দেশের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের সামনে নতুন যুগের সূচনা করেছে। আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়সঙ্গত ও পরিবেশবান্ধব সমাজ গড়তে চাই, যেখানে মানুষের মানবাধিকার পূর্ণরূপে সুরক্ষিত থাকবে।”

শিশু সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

প্রধান উপদেষ্টা শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের তদন্তে বাংলাদেশ সরকার পূর্ণ সহযোগিতা করবে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করবে।

নতুন সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে বাংলাদেশের সব চুক্তি বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি। আমাদের ছাত্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা কঠোর পরিশ্রম করব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি উন্নত ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গড়তে আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।”

শেষ কথা

ড. ইউনূসের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের নতুন সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে একটি কার্যকর এবং স্বচ্ছ প্রশাসন গড়া, যাতে দেশের সব শ্রেণীর মানুষ নিরাপদ ও সুশাসনের অধিকারী হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।