সারসংক্ষেপ: গত ২৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ নিশ্চিত করেছেন যে, চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আনসার সদস্যদের সাথে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ঘটনায় ধাওয়ার মুখে আনসার সদস্যদের পোশাক খুলে পালিয়ে যাওয়ার পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।

বিস্তারিত:

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ গত রবিবার (২৫ আগস্ট) রাতে সংবাদমাধ্যমকে জানান যে, চলমান আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী আনসার সদস্যদের সাথে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

রবিবার দুপুর ১২টা থেকে আনসার সদস্যরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন, যা পরবর্তীতে সচিবালয় পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তাদের দাবির মধ্যে ছিল চাকরি জাতীয়করণ। আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ের সব গেট বন্ধ করে দিয়ে এখানে অবস্থান করেন। এতে করে সচিবালয়ে প্রবেশ বা বের হওয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন ফেসবুকে সচিবালয়ের অবরোধের তথ্য শেয়ার করলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওয়ানা হন।

রাত ৯টা ২০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের সাথে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে, যার ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে অন্তত ৫০ জন আহত হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। আনসার সদস্যরা তাদের পোশাক খুলে জিপিও এলাকা দিয়ে পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা পরে তাদের ফেলে যাওয়া পোশাকগুলোর আগুন ধরিয়ে দেন।

অন্যদিকে, পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

সার্বিক পরিস্থিতি: আন্দোলনকারী আনসার সদস্যদের দাবির মধ্যে চাকরি জাতীয়করণ ছিল মূল বিষয়। তারা নিয়মিত ভাতার পরিবর্তে স্থায়ী চাকরি চেয়েছেন। এর আগেও তারা বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করেছেন, কিন্তু এবার তাদের আন্দোলন সহিংস রূপ ধারণ করেছে।

আন্দোলনকারীদের সাথে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট করেছেন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। সবার প্রতি তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ অনেক আন্দোলনকারী বহিরাগত এবং তারা আনসারের পোশাক ব্যবহার করে অন্য উদ্দেশ্যে আন্দোলন করছেন।

(প্রশ্ন এবং উত্তর):

১. কেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক বললেন আন্দোলনকারী আনসার সদস্যদের সাথে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই? মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলছেন যে, আন্দোলনকারী সদস্যরা মূলত অঙ্গীভূত আনসার এবং তাদের সাথে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই।

২. আন্দোলনকারীরা কী দাবি করেছেন? তারা চাকরি জাতীয়করণ এবং স্থায়ী পদ দাবি করেছেন।

৩. সংঘর্ষের সময় কতজন আহত হয়েছেন? সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহও রয়েছেন।

৪. শিক্ষার্থীরা কেন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন? শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে আংশিকভাবে আটকা পড়া উপদেষ্টাদের অবরুদ্ধ করার খবর পেয়ে প্রতিবাদ জানানোর জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

৫. সেনাবাহিনী কেন ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়েছিল? সেনাবাহিনী উভয়পক্ষের সংঘর্ষের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়েছিল।

৬. আন্দোলনকারীরা কীভাবে পালিয়ে গিয়েছিলেন? আন্দোলনকারীরা তাদের পোশাক খুলে জিপিও এলাকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

৭. ঢাকা মহানগর পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে? ঢাকা মহানগর পুলিশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

৮. মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ কি আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন? তিনি বলেছেন, আন্দোলনকারীরা অনেকেই বহিরাগত এবং তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছেন।

৯. আন্দোলনের কারণে সচিবালয়ে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল? সচিবালয়ের সব গেট অবরুদ্ধ হয়ে যায় এবং কেউ বের হতে বা প্রবেশ করতে পারছিলেন না।

১০. পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? সরকার এবং কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।