সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ দল কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে পড়েছিল। ছোট লক্ষ্য তাড়া করার পথে শুরুর দিকে মনে হচ্ছিল, টাইগাররা সহজ জয়ই পাবে। ২ উইকেট হারিয়ে যখন তারা দলীয় শতক স্পর্শ করেছিল, তখন মনে হচ্ছিল, ম্যাচে এগিয়ে আছেই তারা। তবে তারপর ঘটে বিপত্তি। মাত্র ১২ রান যোগ করতে না করতে ৭ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষমেশ তারা ৯২ রানে হেরে যায়, এবং সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
এখন দ্বিতীয় ওয়ানডে সামনে, আর বাংলাদেশের সামনে একমাত্র পথ—সিরিজ বাঁচাতে এই ম্যাচটি জিততে হবে। দ্বিতীয় ওয়ানডে মাঠে নামছে টাইগাররা, আর তাদের জন্য এটি একটি “জীবন-মরণ” ম্যাচ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আজ, শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে, শুরু হবে বিকেল চারটায়।
মুশফিকের অনুপস্থিতি এবং প্রস্তুতির চাপ
বাংলাদেশ দলের জন্য কিছুটা অস্বস্তির বিষয়ও রয়েছে। কারণ, তাদের অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম সিরিজের বাকি অংশ থেকে ছিটকে গেছেন। আঙুলের চোটের কারণে আগামী এক মাসের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে। তার অভাব দলের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
মুশফিকের অনুপস্থিতিতে, বাংলাদেশের উইকেটকিপার হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে জাকের আলিকে। মেহেদী হাসান মিরাজ এই নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, “দলের সমন্বয়ের কথা যদি বলেন, আমাদের কিন্তু অপশনও খুব বেশি নেই। লিটন দাস অসুস্থ, সে থাকলে দলের সমন্বয়টা আরও ভালো থাকতো হয়ত। যেহেতু ওইরকম সুযোগ নেই, জাকের আলির জন্য বেস্ট অব লাক।” অর্থাৎ, দলের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি থাকলেও, জাকেরের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ।
মিরাজ আরও বলেন, “ও যদি শতভাগ দিতে পারে অবশ্যই ওর নিজের ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো হবে।” তাঁর মতে, জাকেরের এই সুযোগটি তার জন্য একটি জীবনের সুযোগ হতে পারে, যদি সে ভালো পারফর্ম করতে পারে।
সিরিজ জয়ের আশা
তবে মিরাজ এখনো আশাবাদী। সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়ার আগে, বাংলাদেশের সামনে দুটি ম্যাচই রয়েছে। একটি হেরেই তারা সিরিজে পিছিয়ে পড়েছে, তবে সিরিজ জয়ের জন্য এখনও সুযোগ রয়েছে। মিরাজ বলেন, “যেহেতু আমাদের সুযোগ আছে। একটা ম্যাচ হেরেছি, এখনও দুইটা ম্যাচ আছে। সুতরাং আমরা দুইটা ম্যাচ চিন্তা না করে পরবর্তী ম্যাচটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”
মিরাজ আরও যোগ করেন, “আমরা একটু ব্যাকফুটে আছি। যেহেতু আমরা একটা ম্যাচ খেলেছি এখানে, অনেক বছর পর ওয়ানডে খেলেছি। ৭-৮ মাস পর খেলেছি, সবার মাঝে ওই জিনিসটাও একটু কাজ করছিল। অনেকদিন পর আমরা ওয়ানডেতে খেলছি। আমরা প্রস্তুতিটা ওইভাবে নিচ্ছি, আশা করি যেহেতু অনেকদিন পর এই মাঠে খেলছি। ভালো মোমেন্টাম কিভাবে পেতে সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি
বাংলাদেশ দলের প্রত্যাশা এখন দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ভালো পারফর্ম করা এবং সিরিজে ফেরার। মিরাজের ভাষায়, “এটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, কিন্তু মাঠে গিয়ে আমাদেরকে নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দিতে হবে।”
এদিকে, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে ধরনের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্য অনেক কিছু শেখার সুযোগ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ অতীতে ভালো পারফর্ম করেছে, তবে তাদের এই ম্যাচে সফল হতে হলে, প্রতিটি ক্রিকেটারের অবদান নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ দল, যা ৭-৮ মাস পর ওয়ানডে সিরিজ খেলছে, তাদের জন্য এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, সঠিক প্রস্তুতি, একাগ্রতা এবং দলের মধ্যে শক্ত সমন্বয় থাকলে তারা এই ম্যাচে জয় পেতে পারে।
ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের জন্য কী প্রয়োজন?
বাংলাদেশের দলের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা তাদের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় লাভের জন্য প্রয়োজন:
- দলের সমন্বয়: দলের মধ্যে সঠিক সমন্বয় থাকতে হবে। মুশফিকুর রহিমের অনুপস্থিতি, লিটন দাসের অসুস্থতা এবং জাকের আলির মতো নতুন মুখের দায়িত্ব নেয়া—এই সব বিষয় মাথায় রেখে সঠিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দলকে এগিয়ে নিতে হবে।
- অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স: মিরাজ, সাকিব, তামিম, সোহান—এই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের ওপর ম্যাচ জয়ের নির্ভরশীলতা বেশি। তারা যদি নিজেদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করেন, তবে জয় সম্ভব।
- ভালো বোলিং ও ব্যাটিং: ম্যাচের প্রথম দিকের ব্যাটিংটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলাদেশ যদি তাদের বোলিং আক্রমণেও শক্তিশালী থাকে, তাহলে তাদের জন্য ম্যাচটি সহজ হবে।
বাংলাদেশের সামনে এখন দ্বিতীয় ওয়ানডে, আর এটি তাদের জন্য সিরিজ বাঁচানোর শেষ সুযোগ। মুশফিকুর রহিমের অনুপস্থিতি, লিটন দাসের অসুস্থতা এবং সামগ্রিক প্রস্তুতির মধ্যেও দলের সবাই যদি একত্রে কাজ করতে পারে, তবে তারা সিরিজে ফিরে আসার সুযোগ পাবে। সুতরাং, টাইগারদের জন্য এই ম্যাচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলা নিউজ বিডি হাব/ রনি মিয়া