দুপুরে বিএনপির র‍্যালি, যেসব সড়ক প্রদক্ষিণ করবে

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিশেষ দিন হিসেবে পরিচিত, যা জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি ১৯৭৫ সালে দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের দিন ছিল। সে দিন সিপাহি-জনতার বিপ্লব শুরু হয়ে আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়। সেই দিনটির স্মরণে প্রতিবছরই বিএনপি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করে থাকে। এবছরও এরকমই একটি ঐতিহাসিক দিন এসেছে, যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিএনপি নেতাকর্মীরা বর্ণাঢ্য র‍্যালি এবং সমাবেশের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করবেন।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‍্যালি

৮ নভেম্বর, শুক্রবার বিএনপি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ঢাকার নয়াপল্টন থেকে একটি বৃহৎ র‍্যালি আয়োজন করবে। এই র‍্যালি সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করবে এবং শেষ হবে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। র‍্যালির শুরু হবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে, যখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

র‍্যালির পথনির্দেশনা ও আয়োজন

বিএনপির মিডিয়া সেল জানিয়েছে, র‍্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত যাবে। র‍্যালির রুট অনুযায়ী এটি কাকরাইল মোড়, কাকরাইল মসজিদ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, শাহবাগ, হোটেল শেরাটন, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হবে।

এই র‍্যালি হবে দেশব্যাপী বিএনপির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ র‍্যালি। বিশেষ করে, দলের নেতারা দাবি করেছেন যে, এটি দেশের ইতিহাসে স্মরণকালের সেরা র‍্যালি হতে যাচ্ছে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও উদ্বোধন

র‍্যালি শুরু হওয়ার আগে, নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর র‍্যালির উদ্বোধন করবেন। এরপর র‍্যালিটি সড়ক পথে যাত্রা করবে এবং নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে এই ঐতিহাসিক দিনটির গুরুত্ব উদযাপন করবেন।

র‍্যালির শেষে সমাপনী বক্তব্য

এই র‍্যালির শেষে তারেক রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ভার্চুয়ালি র‍্যালির সমাপনী বক্তব্য দেবেন। সাধারণত, এই দিনটিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং গণতন্ত্রের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

৭ নভেম্বর ও শহীদ জিয়াউর রহমান

প্রতি বছরের মতো, ৭ নভেম্বর বিএনপি নেতাকর্মীরা শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে শেরেবাংলা নগরে যান। এই দিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালিত হয়। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বিএনপির নেতাকর্মীরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ৭ নভেম্বর ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। সেই দিন দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনতা একত্রিত হয়ে আধিপত্যবাদী শক্তিকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের পরে, দেশের রাজনীতি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রাজনীতি হয়ে ওঠে, যেখানে গণতন্ত্রের শত্রুদের পরাজিত করা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা ছিল মূল লক্ষ্য।

৭ নভেম্বর: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও তার গুরুত্ব

৭ নভেম্বরের পরবর্তি সময়ে, বাংলাদেশের রাজনীতি ছিল গণতন্ত্র এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই। শহীদ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর, দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে যায়। বিএনপি মনে করে, ৭ নভেম্বরের বিপ্লব বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উন্নয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।

এছাড়া, ৭ নভেম্বর বিএনপি মনে করে, এই দিনটি দেশের ইতিহাসে সশস্ত্র সংগ্রামের দিন ছিল, যেখানে ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে সফলভাবে শক্তিশালী সরকারকে পরাজিত করে। ৭ নভেম্বরের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তন বিএনপি নেতাদের মতে, এটি গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে এক বড় জয় ছিল।

বিএনপির আসন্ন কর্মসূচি

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপি বেশ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ১০ দিনব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে, র‍্যালি, আলোচনা সভা, সেমিনারসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

৭ নভেম্বর, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির র‍্যালিসমাবেশ দেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনকে স্মরণ করার একটি দৃষ্টান্ত। এ র‍্যালি ও কর্মসূচির মাধ্যমে দলটি তাদের শক্তি ও ঐক্য প্রদর্শন করতে চায়, এবং দেশের জনগণের প্রতি গণতন্ত্রের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে চায়।

এছাড়া, বিএনপির এই কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সংহতি প্রকাশ করছে, যা আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করতে সহায়ক হবে।

বাংলা নিউজ বিডি হাব/ জান্নাতুল ফেরদৌস মিরা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।