চট্টগ্রাম আবাহনী ফুটবল ক্লাবের দলবদল নিয়ে শেষ মুহূর্তে ঘটে গেল নাটকীয় পরিবর্তন। গত রাতের শেষ মুহূর্তে, ঠিক বারোটা বাজার আগমুহূর্তে, চট্টগ্রাম আবাহনী তাদের নতুন খেলোয়াড়দের তালিকা জমা দিয়েছে। পূর্বে শেখ রাসেল ও শেখ জামাল ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা দলবদল করবে না, তবে চট্টগ্রাম আবাহনীর পরিস্থিতি ছিল অনিশ্চিত।
চট্টগ্রাম আবাহনী শেষ পর্যন্ত ৩০ জন খেলোয়াড়ের একটি তালিকা জমা দিয়েছে, যা দিয়ে এবারের লিগে ১০টি দলের মধ্যে তারা একটি হতে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের পেছনে বেশ কিছু সাবেক খেলোয়াড়, যেমন জাহিদ হাসান এমিলি এবং মামুনুল ইসলামের উদ্যোগ ছিল। চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব শামসুল হক চৌধুরী শেষ মুহূর্তে দল গঠন ও পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন।
দলের গঠন ও পরিবর্তন
চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব শামসুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে, সাবেক খেলোয়াড়রা দলের পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেন। শুরুর দিকে, চট্টগ্রাম আবাহনী দল গঠনের বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে ছিল। প্রথমে শোনা যায়, ক্লাবটি হয়তো দলই গড়বে না। পরে জানা যায়, তারা খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক কমানোর জন্য আলোচনা চালাচ্ছে। এই দোলাচলে, অনেক খেলোয়াড় ব্রাদার্স ক্লাবের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন, যা চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।
ব্রাদার্স ক্লাবের অবস্থান
ব্রাদার্স ক্লাব, যাদের আর্থিক সংকট বেশ কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনের দায়িত্ব গ্রহণের পর, তাদের জন্যও সমস্যা ছিল। ক্লাবটি আবাহনী থেকে একটি ২১ জনের খেলোয়াড়ের তালিকা পেয়েছিল। এটি তাদের জন্য জটিলতা তৈরি করে কারণ একই খেলোয়াড়রা ব্রাদার্স ক্লাবের সাথে নিবন্ধিত ছিল।
শেষ মুহূর্তের পরিবর্তন
শেষ রাতে, চট্টগ্রাম আবাহনী দল গঠন নিশ্চিত করে। জামাল ভূইয়াকে দলে চাচ্ছিল ব্রাদার্স, কিন্তু আবাহনী জানিয়ে দেয় যে জাতীয় দলের অধিনায়ককে তারা চূড়ান্ত করেছে। পরবর্তীতে জামালকে ছাড়াই দল দেওয়া হয়, যা ব্রাদার্সে জামালের খেলায় বাধা সৃষ্টি করে না। চট্টগ্রাম আবাহনী তাদের পূর্বের ২১ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে সুমন রেজা, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মিরাজুলসহ আরও ১১ জন খেলোয়াড়কে যুক্ত করে।
দল গঠনের উত্সাহ
ফুটবল ক্লাবের ম্যানেজার আরমান আজিজ জানিয়েছেন যে, তিনি ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদের নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত দল গঠন করার ঝুঁকি নেবেন না। গত মৌসুমে অনেক খেলোয়াড়ের পেমেন্ট বাকি ছিল এবং আগের ম্যানেজারের আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি আগ্রহ হারিয়েছিলেন। তবে সাবেক খেলোয়াড়রা দল গঠনের দায়িত্ব নেওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট।
এমিলির মন্তব্য
জাহিদ হাসান এমিলি বলেছেন, “এতগুলো খেলোয়াড়ের ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে দেখে আমাদের খুব খারাপ লাগছিল। তাই আমরা শেষ মুহূর্তে দল গঠন করতে এগিয়ে এসেছি। ৩০ জন খেলোয়াড়কে সাইন করেছি এবং সবার সহায়তা চাই।”
সার্বিক চিত্র
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাবে, বেশিরভাগ ক্লাব দল গঠনের সমস্যায় পড়েছিল। শেখ রাসেল ও শেখ জামালও তাদের দল সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে, চট্টগ্রাম আবাহনীর শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তে এবারের মৌসুমে ১০টি দলের লিগ নিশ্চিত হয়েছে।
FAQs:
১. চট্টগ্রাম আবাহনী কেন শেষ মুহূর্তে দল গঠন করেছে?
চট্টগ্রাম আবাহনী খেলোয়াড়দের ভবিষ্যতের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে শেষ মুহূর্তে দল গঠন করেছে।
২. শেখ রাসেল ও শেখ জামাল কেন দলবদল করবে না?
শেখ রাসেল ও শেখ জামাল তাদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দলবদল করবে না বলে জানিয়েছে।
৩. চট্টগ্রাম আবাহনীর নতুন খেলোয়াড়দের তালিকায় কে কে আছেন?
চট্টগ্রাম আবাহনীর নতুন তালিকায় সুমন রেজা, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মিরাজুলসহ আরও ১১ জন খেলোয়াড় আছেন।
৪. ব্রাদার্স ক্লাবের অবস্থা কী ছিল?
ব্রাদার্স ক্লাব আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠেছে এবং খেলোয়াড়দের নিবন্ধন নিয়ে সমস্যায় পড়েছিল।
৫. এমিলি দলের গঠন নিয়ে কী বলেছেন?
এমিলি বলেছেন, খেলোয়াড়দের ভবিষ্যতের জন্য তিনি দুঃখিত এবং দলের গঠনের জন্য তিনি সহায়তা চেয়েছেন।
৬. আরমান আজিজ কেন দলের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন?
আরমান আজিজ ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদের নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় দলের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
৭. আবাহনী কতজন খেলোয়াড়ের তালিকা জমা দিয়েছে?
আবাহনী ৩০ জন খেলোয়াড়ের তালিকা জমা দিয়েছে।
৮. জামাল ভূইয়া কেন ব্রাদার্সে খেলতে পারবে?
আবাহনী শেষ পর্যন্ত জামাল ভূইয়াকে দলে না নেওয়ায় ব্রাদার্সে জামালের খেলায় কোনো বাধা নেই।
৯. কেন বেশিরভাগ ক্লাব দল গঠন নিয়ে সমস্যায় পড়েছে?
রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে বেশিরভাগ ক্লাব দল গঠন নিয়ে সমস্যায় পড়েছে।
১০. চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্য শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্ত কেন গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এটি ক্লাবের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করেছে এবং লিগে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে।