বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং এটি বর্তমানে খুলনা অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আজ শনিবার সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্রবন্দর এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত ঘোষণা করা হয়েছে।

আবহাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতি

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, বর্তমানে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা মূলত গভীর নিম্নচাপের কারণেই হচ্ছে। এই নিম্নচাপ বর্তমানে যশোর অঞ্চলে স্থল নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। নিম্নচাপটি ক্রমশ পশ্চিম দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে সরে যাবে। এর প্রভাবে আজ সারাদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। তবে সোমবার থেকে বৃষ্টি কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

বৃষ্টির পরিমাণ এবং প্রভাব

গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় সর্বোচ্চ ২৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর আকাশ মেঘলা এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। একইভাবে, চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকাকে তিন নম্বর সতর্কসংকেত দেখানো হয়েছে।

গত মাসের ২০ তারিখ থেকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে উজান থেকে আসা ঢলে ১১ জেলায় বন্যা দেখা দেয়। এ কারণে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তাপমাত্রা ও বৃষ্টির পরিবর্তন

গত আট দিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহ চলছে এবং অন্তত ২০টি জেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গত বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে বিশেষ করে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হয়। কক্সবাজারে রেকর্ড ৪০১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় এবং শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়।

বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আজ শনিবার তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে, তবে রাতের তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।

ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, বৃষ্টি আগামীকাল থেকে অনেকটাই কমে যাবে এবং সোমবার থেকে বৃষ্টি একদমই না-ও থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং এটি যশোর অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আজ সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সমুদ্রবন্দর সতর্কতা

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্কসংকেত দেখানো হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোর জন্য নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, কক্সবাজার শহরের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, এবং সৈকত এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা, এবং শহরের প্রধান সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক পানিতে ডুবে গেছে।

পরবর্তী দিনের পূর্বাভাস

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কাও রয়েছে।