বর্তমানে দেশের বাজারে বেশির ভাগ শাকসবজির দাম এখনো বেশ উঁচু রয়েছে। তবে কিছু পণ্যের, বিশেষ করে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এক ডজন ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগের তুলনায় কিছুটা কম।

বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে সবজির সরবরাহ এখনো চাহিদার তুলনায় কম। অতীতে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতির কারণে শিগগিরই সবজির দাম কমবে না। অন্যদিকে, বড় উৎপাদক কোম্পানিগুলো সরাসরি আড়তে ডিম সরবরাহ শুরু করেছে, যার ফলে ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে।

গতকাল রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচের দামও কমেছে। পূজার ছুটির কারণে কিছুদিন মরিচের আমদানি বন্ধ ছিল, কিন্তু এখন তা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ফলে মরিচের দাম আগামীতে আরও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে বেশির ভাগ শাকসবজির দাম এখনো বেশ চড়া রয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেগুনের দাম কেজিতে ২০-৪০ টাকা বেড়ে ১২০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঢ্যাঁড়স, পটোল, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙের দামও ৮০-১০০ টাকার মধ্যে রয়েছে। লালশাকের আঁটি ২০-৩০ টাকা, পুঁইশাক ৪০-৫০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে ফসলের ক্ষতি এবং সরবরাহের অভাবকে দায়ী করা হচ্ছে। ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। সরকার ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। চলতি মাসে ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং আমদানি শুল্ক ২৫% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে।

আড়তদাররা জানান, ডিমের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ১৫ লাখ করে ডিম সরবরাহ করতে হবে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে শীতের সবজি আসলে ডিমের দাম কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দামও চড়া রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৯০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম ৭৫০-৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোক্তারা এ পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক ক্রেতা বলেন, “সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তা মানা হচ্ছে না।” বিক্রেতারা জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার কারণে উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে, যা বাজারের দামের ওপর প্রভাব ফেলছে।

এই পরিস্থিতিতে, ভোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।