ফিলিস্তিনের মানুষ অনেক দিন ধরে নির্যাতন সহ্য করছে। তারা তাদের স্বাধীনতা এবং অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে। সম্প্রতি হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার পর, আমাদের দেশেও এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে নিজেদের মতামত প্রকাশ করছে এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর পায়, তারা একত্রিত হয়ে জানাজায় অংশ নেয়। তারা বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনিদের সাহস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। তারা আমাদেরকে শিখিয়েছে যে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়।” তারা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং মুসলিম সমাজকে একত্রিত হয়ে জালিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, “ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য যারা লড়াই করছে, তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের কণ্ঠস্বর সব সময় নিপীড়িত মানুষের জন্য উচ্চ হবে। আমাদের ঈমানি দায়িত্ব হলো, আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার পাশে থাকব এবং তাদের জন্য সাহায্য করব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রার্থনা করা হয়। নামাজে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, “বিশ্বনেতারা কিছুই করছেন না। তারা ইসরায়েলি বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে।” তারা মনে করেন, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর পরও মুসলমানদের স্বাধীনতার সংগ্রাম থামবে না। তারা যে কোনো মূল্যে ইসরায়েলের কবল থেকে নিজেদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইমাম আশরাফ উদ্দিন খান এই নামাজের নেতৃত্ব দেন। এতে উপাচার্য, শিক্ষক এবং দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, “১৯৬৮ সাল থেকে ইসরায়েল গাজায় হত্যা চালাচ্ছে। তারা নারীদের, শিশুদের এবং এমনকি মায়ের কোলে থাকা ও হত্যা করেছে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা বলেন, “যে ভূমিতে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, সেটি আল্লাহর। আমরা আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করছি।” তারা জানায়, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু আমাদের সংগ্রামকে থামাতে পারবে না। তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, মুসলমানদের বিজয় আসবেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে হাজারো শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তারা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের আত্মার শান্তি কামনা করে এবং মুক্তির সংগ্রামের জন্য তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করে। তারা বলেন, “যদি একজনও বিশ্বাসী মানুষ বেঁচে থাকে, তবে স্বাধীনতার পতাকা উড়বে।”

ইসরায়েলি বাহিনী ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে, যা পুরো মুসলিম উম্মাহকে বিচলিত করেছে। তারা মনে করে, এই হত্যা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতি কোনো প্রভাব ফেলবে না। বরং, এটি তাদের লড়াইয়ের নতুন উৎসাহ যোগাবে।

আমরা যদি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ না করি, তাহলে তাদের এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। আমাদের উচিত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদেরকে সমর্থন করা। আমাদের সবার উচিত একত্রিত হয়ে এই সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং তাদের স্বাধীনতার জন্য সাহায্য করা।

আসলে, ফিলিস্তিনের মানুষ আমাদের শেখাচ্ছে যে, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করা মানে হলো নিজেদের অধিকার রক্ষা করা। তাদের সাহস ও ত্যাগ আমাদের সবার জন্য একটি দৃষ্টান্ত। তাই আমাদের উচিত, আমরা যতটুকু পারি তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জন্য আমাদের সমর্থন প্রকাশ করা।

শেষমেশ, আমরা যদি স্রষ্টার সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা দেখাই, তাহলে আমাদের হৃদয়ে শান্তি ও সুখ বিরাজ করবে। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতা যেন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে পারে, আমরা সেই আশা করি।