ভারতের বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার কারণে ফারাক্কা ব্যারেজের সমস্ত ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে এই গেটগুলি খুলে দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিশেষত প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার কারণে ব্যারেজের উপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে।

ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে গেটগুলো খুলে দেওয়া প্রয়োজন হয়েছে। এতে বাংলাদেশের সীমান্তে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং একদিনে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হবে।

ভারতের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, নেপাল থেকে এখনো কোনো পাহাড়ি ঢল আসেনি, যা কিছুটা আশার বিষয়। কিন্তু, বাঁধের পানির চাপ এত বেশি যে, ফিডার ক্যানেলে পানির পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক এবং ডাউনস্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ানো হয়েছে।

বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় সতর্ক রয়েছে এবং প্রতিমুহূর্তে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় যদি গেটগুলো না খোলা হতো, তাহলে বাঁধের ওপর অত্যন্ত বড় চাপ পড়ত এবং তা বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারত।

২০ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে ১১টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এই জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। মোট ৭৭টি উপজেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯০১টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩০।

রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়া বাংলাদেশে বন্যার সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। পানি ছাড়ার কারণে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টির কারণে ফারাক্কা ব্যারেজের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গঙ্গার পানির স্তরের বৃদ্ধি এবং নদীর অববাহিকার চাপের কারণে ফারাক্কা ব্যারেজের পানি ছাড়া হচ্ছে।

[helpie_faq group_id=’179’/]