ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার কারণে ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমরা যে তথ্য সংগ্রহ করেছি তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বন্যার কারণ ও ফারাক্কা বাঁধের ভূমিকা
সম্প্রতি ভারতে বিহার ও ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টির কারণে নদীর পানির স্তর বেড়ে গেছে। ফলে ফারাক্কা বাঁধে পানির চাপ অনেক বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ফারাক্কা বাঁধের সমস্ত গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, ফারাক্কা বাঁধের পানির স্তর বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে, ফলে গেট খুলে পানি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের বন্যার আশঙ্কা
ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, এবং মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দারা এই সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।
পানির স্তরের পরিবর্তন ও বাঁধের অবস্থা
ফারাক্কা বাঁধের আপস্ট্রিমে পানির ধারণক্ষমতা ২৬.২৪ মিটার। বিপৎসীমা ২২.২৫ মিটার এবং সতর্কতাসীমা ২১.২৫ মিটার। বর্তমানে পানির স্তর বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার পৌঁছেছে। এই কারণে, বাধ্য হয়ে গেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং প্রতি দিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন যে, আপাতত বন্যার কোনো পূর্বাভাস নেই। তবে, পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে গেলে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, এবং মানিকগঞ্জ সহ অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে কারণ পানি না ছাড়লে বাঁধের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এই কারণে ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস
কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গ এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও বিহারে আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে গঙ্গার পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা ফারাক্কা বাঁধে আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
[helpie_faq group_id=’181’/]