বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে এখন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রহর গুণছে। শেখ হাসিনা, যিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাকে নিয়ে নতুন আলোচনার ঝড় বইছে। শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় প্রথমে জানিয়েছিলেন, তার মা আর রাজনীতিতে ফিরে আসবেন না। জয় বলেছিলেন, “আমার মনে হয় এখানেই শেষ। আমার পরিবার এবং আমি, আমাদের যথেষ্ট হয়েছে।”
সজীব ওয়াজেদ জয়ের নতুন সুর
তবে কয়েকদিন পরই জয় তার অবস্থান পাল্টে বলেন, “অবশ্যই তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে ফিরবেন, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।” এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত যে, শেখ হাসিনা শীঘ্রই দেশে ফিরে এসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করবেন।
শেখ হাসিনার শোক দিবসের আহ্বান
গত ১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক দিবস পালনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি গোপালগঞ্জ ও বরিশালের জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং সেই কলরেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল।
রাজনীতিতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আগমন
জয়, যিনি নিজে রাজনীতিতে যোগ দিতে প্রস্তুত ছিলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে নেতাকর্মীদের কোনো নির্দেশনা দেননি। এর পাশাপাশি, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় অনেক নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকেই। ফলে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা নেতৃত্বের অভাব বোধ করছেন।
নতুন নেতৃত্বের গুঞ্জন
এই পরিস্থিতিতে সামাজিক মাধ্যম এবং বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। এতে নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন, সে বিষয়ে নানা আলোচনা চলছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
অপপ্রচার এবং বাস্তবতা
এদিকে, আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা এই গুঞ্জনগুলোকে অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, “এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করার জন্য। বিএনপি-জামায়াত এসব অপপ্রচার ছড়াচ্ছে, যা আমরা আগেও দেখেছি।” তৃণমূলের কর্মীরা শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটি স্বীকার করেছেন ওই নেতা। তিনি আরও বলেন, “আমাদের যে ভুল আছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমরা ভুলগুলো শুধরে আবার দলকে সক্রিয় করার চেষ্টা করবো।”
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জের। নতুন নেতৃত্ব, দলের সংগঠনের পরিস্থিতি, এবং বিভিন্ন অপপ্রচার—সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগ আগামী দিনগুলোতে কীভাবে এগিয়ে যাবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।