আমাদের দেশে এলপিজি বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের দাম অনেক সময় পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে গাড়ির জন্য ব্যবহৃত এলপিজি গ্যাসের দাম আমাদের বাজেটের ওপর প্রভাব ফেলে। চলুন, আমরা ২০২৪ সালে গাড়ির এলপিজি গ্যাসের দাম এবং এর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।

এলপিজির দাম: একটি সামগ্রিক চিত্র

২০২৪ সালে সাড়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৫৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২ হাজার ৪৫৭ টাকা, ৩০ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩ হাজার ৬৮৬ টাকা এবং ৩৫ ও ৪৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম যথাক্রমে ৪ হাজার ৩০০ ও ৫ হাজার ৫২৯ টাকা। এই দামগুলি সাধারণ মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের রান্নার খরচ এবং যানবাহনে ব্যবহৃত গ্যাসের খরচের ওপর প্রভাব ফেলে।

বিগত বছরের তুলনায় বর্তমান দাম কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা জানা জরুরি। ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে। এটি বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর ভিত্তি করে দাম পরিবর্তন করে, যা বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল।

এলপিজির দাম বৃদ্ধি: কারণ ও প্রভাব

বিগত মাসগুলোতে এলপিজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন, ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম গত মাসে ১ হাজার ৪২১ টাকা ছিল, যা বর্তমানে ৪৪ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৪৬৫ টাকা হয়েছে। প্রতি কেজি এলপিজির দাম এখন ১১৮ টাকা ৪৪ পয়সা।

এছাড়া, যানবাহনের জন্য ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দাম বর্তমানে প্রতি লিটার ৬৫ টাকা ২৬ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের মাসে এর দাম ছিল ৬৩ টাকা ২১ পয়সা। এই দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে, কারণ এটি পরিবহণের খরচ বাড়াবে।

গ্যাসের দাম বাড়লে ভোক্তাদের উপর প্রভাব পড়ে। সাধারণ মানুষ রান্না করতে কিংবা গাড়িতে গ্যাস ব্যবহার করতে বেশি খরচ করবে। এটি তাঁদের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য।

এলপিজির দাম বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া

এলপিজির দাম বৃদ্ধির পর ভোক্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কিছু মানুষ মনে করেন যে, এই দাম বৃদ্ধির ফলে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা কঠিন হবে। অন্যদিকে, কিছু ব্যবসায়ী মনে করেন যে, এটি তাঁদের ব্যবসার উপর প্রভাব ফেলবে।

রেস্তোরাঁ ও ক্যাটারিং সার্ভিসের ব্যবসায়ীরা এলপিজির দাম বৃদ্ধির ফলে খাবারের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে, সাধারণ মানুষের খাবারের খরচ বেড়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে, সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং বাজেটের পরিকল্পনা করে চলতে হবে।

আমাদের করণীয়

এখন, আমাদের উচিত এলপিজির দাম বৃদ্ধির সাথে মানিয়ে নেওয়া। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হলে আমাদের রান্নার পদ্ধতি পরিবর্তন করা উচিত। প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত রান্না না করে খরচ কমানো যায়। এছাড়া, বিভিন্ন বিকল্প ব্যবহার করতে পারি, যেমন বিদ্যুৎ বা অন্য ধরনের চুলা ব্যবহার।

আমাদের উচিত এই পরিস্থিতিতে সচেতন থাকা এবং যেভাবে সম্ভব খরচ কমানো। যেমন, সারা মাসের জন্য পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য কিনলে খরচ কমানো সম্ভব।

এলপিজির দাম বৃদ্ধি আমাদের জীবনে বড় প্রভাব ফেলে। তবে, সচেতনতার মাধ্যমে আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারি। গাড়ির এলপিজি গ্যাসের দাম ২০২৪ আমাদের জন্য একটি গুরুতর বিষয়, এবং এটি নিয়ে আমাদের সঠিক তথ্য জানা জরুরি।