নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৭৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। খবর পাওয়া গেছে যে, শনিবার (২৫ আগস্ট) রাতে আগুনের ঘটনা ঘটে এবং এখনও কারখানায় আগুন জ্বলছে।

আগুনের সূত্রপাত এবং লড়াই

রবিবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে স্থানীয়দের মাধ্যমে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। সেই সময়ই ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঢাকা ফুলবাড়িয়া, ডেমরা, কাঁচপুর, আদমজী ইপিজেড এবং কাঞ্চন ফায়ার স্টেশন থেকে ১২টি ইউনিট যোগ দেয়। নারায়ণগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও তাদের সহায়তা করে। তবে, দাহ্য পদার্থ ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আগুনের সাথে সাথে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণও ঘটে, যা আশপাশের এলাকাগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

নিখোঁজদের তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতি

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম জানিয়েছেন, নিখোঁজদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে ১৭৬ জনের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। নিখোঁজদের বেশিরভাগের বাড়ি রূপগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে। তারা কেউ কারখানার শ্রমিক নয়, বরং গত রাতে লুটপাটের সময় কারখানায় আসেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সাবেক মন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই কারখানাটিতে লুটপাট চলছে। আগুন লাগার সময়ও কিছু লোক লুট করতে গিয়ে ভেতরে আটকা পড়ে বলে দাবি করছেন তারা।

আগুন নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা

ফুলবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক রেজাউল করিম (প্রশিক্ষণ) জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ১২টি ইউনিট কাজ করছে। তবে, আগুনের উৎস এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা

গাজী টায়ার কারখানার আশপাশের মার্কেট, হাটবাজার এবং শিল্প কলকারখানার লোকজন আতঙ্কিত। উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল জানিয়েছেন, কোনো ধরনের অরাজকতা, লুটপাট, বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকবে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরেকটি দুর্ঘটনা

ফেনী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বন্যার পানির তীব্র চাপে মুছাপুর ক্লোজার স্লুইসগেট ভেঙে পড়েছে। এতে ব্রিজ এবং সিএনজি অটোরিক্সা তলিয়ে গেছে। এই ঘটনার কারণে চরাঞ্চলের হাজার কোটি টাকার মাছ ও ফসলের ক্ষতি হতে পারে।

স্থানীয় নাম ও তালিকা

  • স্থানীয় নাম ও তালিকা: ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ৩ থেকে ৪ শতাধিক লোক কারখানার ভিতরে আটকা পড়ে আছেন।
  • নিখোঁজ ব্যক্তির নাম:  সাহালম, আমিনুল, জজ মিয়া, আবু সাঈদ, আনিস, শাহাদাত, তামিম, লাদেন, সুজন, রমজান, রেজাউল করিম, রাসেল, মামুন, হাসান, ইউসুফ, আবু বক্কর, রুবেল, শাহিন, সিকদার,শরিফ, ইসমাইল, সুজন, মতিন, বাছেদ, নুর আলম, আরিফ, ইকবাল, ইব্রাহিম, নিরব, নাইম, মোতালেব,।
  • ভয়াবহ পরিস্থিতি: আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি এবং ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।