রাজশাহী: রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে নাটোরের চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন (২২) হত্যা মামলায় আসাদুজ্জামান আসাদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা না দিলে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন। আলোচিত মামলায় আসাদুজ্জামানের দুই ভাই, ফয়সাল শাহ ফটিক ও আলীম আল রাজী,ও আসামি ছিলেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

মামলার পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু জানিয়েছেন, মামলাটি ৩০ জুন নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছিল। আদালতে মোট ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

আজকের রায়ে আসাদুজ্জামান আসাদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। রায়ের সময় অন্য দুই আসামি কারাবন্দি ছিলেন। তাদের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। পলাতক আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের পর তার সাজা কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়, নলডাঙ্গা উপজেলার আমতলী বাজার সংলগ্ন চার রাস্তার মোড়ে আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে জামিউল আলীম জীবন ও তার বাবা ফরহাদ শাহকে মারধর করা হয়। জামিউল আলীম জীবন মসজিদের মাইক চুরি নিয়ে সালিশ বৈঠকের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে সমালোচনা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসাদুজ্জামান তার সহযোগীদের নিয়ে এই হামলা চালান। মারধরের কারণে জামিউল আলীম জীবন গুরুতর আহত হন এবং পরবর্তীতে ২৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

মামলার বাদী জামিউল আলীম জীবনের মা জাহানারা বেগম অভিযোগ করেছেন যে, তারা আসাদুজ্জামান আসাদের ফাঁসির রায় আশা করেছিলেন। কিন্তু আদালতের রায় তাদের আশানুরূপ হয়নি। তাই তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

নাটোরের নলডাঙ্গার এই মামলায় আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরিবারের সদস্যদের অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিহতের পরিবার রায়ের প্রতি এক ধরনের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং উচ্চ আদালতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।