অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কেন গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘর করা হবে?
যেভাবে গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে, তা দেশের মানুষের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। গণভবন আগে কখনো গণমানুষের ভবন হিসেবে পরিগণিত হয়নি। কিন্তু, গণ-অভ্যুত্থানের সময়, যা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে হয়েছিল, গণভবনকে জনগণের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্মৃতি সংরক্ষণ এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের কর্মকাণ্ড
এই স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হলো, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়কালে ঘটে যাওয়া অন্যায়-অবিচারগুলির স্মৃতি রক্ষা করা। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এই বিষয়ে জানান যে, গণভবনকে সেই অবস্থায় রাখা হবে, যেভাবে তা অভ্যুত্থানের সময় ছিল।
আন্তর্জাতিক উদাহরণ
আসিফ মাহমুদ বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অন্যান্য দেশগুলোতে এমন স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের উদাহরণ অনুসরণ করে গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেখানে ফ্যাসিবাদী সরকারের কর্মকাণ্ড প্রদর্শিত হবে এবং জনগণ সেই স্মৃতি দেখতে পারবে।
বিচার এবং পুনর্বাসন
ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনর্বাসন বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে, বিচারের আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ কোনো কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পাবে না।
গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমস্যা
গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বল্পমেয়াদি দাবি পর্যালোচনা করবে এবং মালিকদের প্রতিনিধিও এতে থাকবে।
বন্যাদুর্গত এলাকা এবং অন্যান্য বিষয়
বন্যাদুর্গত এলাকার জন্য ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য শিগগির কার্যক্রম শুরু হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠক
এছাড়া, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কাজ দ্রুত শুরু হবে। এতে শহীদদের তালিকা করা হবে এবং আহতদের লংটার্ম চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
এভাবে গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘরে পরিণত করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, জনগণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে গণভবন প্রতিষ্ঠিত হবে।