আজ, ২৭ সেপ্টেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি অ্যামেরিকান স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ভাষণ দিচ্ছেন। এ ভাষণে তিনি তুলে ধরবেন, কেন তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
নতুন বাংলাদেশ গঠনের চিত্র
ড. ইউনূস ভাষণে বর্ণনা করবেন ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন। তিনি বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানের রূপান্তরের নতুন সম্ভাবনার কথাও জানাবেন। ভাষণে তিনি বলবেন, বাংলাদেশের জনগণ যেভাবে একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, সেটি বিশ্ববাসীর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।
বৈশ্বিক সমস্যা ও বাংলাদেশের অবস্থান
ড. ইউনূস ভাষণে আন্তর্জাতিক সংকটের কথা উল্লেখ করবেন, যেমন ফিলিস্তিনে চলমান সংঘর্ষ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তিনি বলেন, এই সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান জরুরি। একইসাথে, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বিশ্ববাসীর সহযোগিতা কামনা করবেন।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরবেন। বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন একটি গুরুতর সমস্যা, যা সবাইকে একত্রে মোকাবেলা করতে হবে।
মানবাধিকার ও বাক্স্বাধীনতার অঙ্গীকার
ভাষণে ড. ইউনূস মানবাধিকার ও বাক্স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করবেন। তিনি জানান, তাঁর সরকার সব ধরনের সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে এবং বাক্স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নতুন উদ্যোগ ও সংস্কার
ড. ইউনূস তাঁর ভাষণে উল্লেখ করবেন, বিগত দুই মাসে বাংলাদেশের অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সরকারের জন্য কি ধরনের সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। তিনি পুলিশ সংস্কারসহ বিভিন্ন কমিশন গঠনের পরিকল্পনার কথা জানাবেন, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
ছাত্র ও যুব সমাজের ভূমিকা
তিনি ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলনের গুরুত্বের কথা বলবেন এবং কীভাবে তারা বৈষম্যবিরোধী সমাজ গঠনে ভূমিকা রেখেছে, তা তুলে ধরবেন। ভাষণের মাধ্যমে তিনি যুবকদের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করবেন এবং তাঁদের শক্তিশালী ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা বুঝাবেন।
বিশ্বে শান্তির জন্য সমর্থন
জাতিসংঘের এই অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘কাউকে পিছিয়ে রাখা নয়’। ড. ইউনূস এই প্রতিপাদ্যের আলোকে শান্তি ও মানব মর্যাদার অগ্রগতির জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাবেন।
বক্তব্যের উদ্দেশ্য
অবশেষে, ড. ইউনূস ঘোষণা করবেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়ে অটল রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করবেন, বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জিত হবে।
শেষ কথা
ড. ইউনূসের এই ভাষণ নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যাশার কথা বলছে। তিনি যা বলবেন, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।