বাংলাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু কর্মকর্তার চাকরি থেকে সরানোর ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ছয়জন কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করেছে। এর আগে শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কর্মকর্তারা বিদ্যুৎ বন্ধের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন এবং তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম পবিস ১-এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লা আল মামুন। এছাড়া, নরসিংদী পবিস ১-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল্লাহ আল হাদী, নরসিংদী পবিস ২-এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ভুইয়াঁ, ঢাকা পবিস ১-এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার তামজিদুল ইসলাম, নওগাঁ পবিস ২-এর জেনারেল ম্যানেজার শাহ মো. রাজ্জাকুর রহমান, এবং গাজীপুর পবিস ১-এর ওয়ারিং পরিদর্শক শেখ রহমত উল্লাহ নাজিরও ছিলেন।
এর আগে, ১৬ অক্টোবর ২০ জন জিএম, ডিজিএম এবং এজিএমের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এর প্রতিবাদে, ১৭ অক্টোবর কর্মকর্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না করলে ঢাকার দিকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির হুমকি দিয়েছিলেন। এর ফলে, বিভিন্ন জেলায় ৬১টি সমিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা লাখ লাখ গ্রাহকের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়।
এখন, আন্দোলনের মধ্যে বিকালে আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তা আটক হন। এ ঘটনায় সরকারের তরফ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন। পরবর্তীতে, এই ছয়জন কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যুৎ বন্ধের জন্য ক্ষমা চান এবং সবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
এই ঘটনা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় এক নতুন মোড় এনে দিয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের এই আন্দোলন এবং সরকারের পদক্ষেপ দেশের জনগণের জন্য একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং কর্মকর্তাদের অধিকার রক্ষার জন্য সকলের সম্মিলিত চেষ্টা প্রয়োজন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া হবে? জনগণের বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে অব্যাহত থাকে, সেই চেষ্টা চালাতে হবে। সরকার এবং বিদ্যুৎ বোর্ডের মধ্যে আলোচনা বাড়ানো জরুরি। কর্মকর্তাদের জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা তাদের কাজ সঠিকভাবে করতে পারেন।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় এ ধরনের ঘটনা আগে অনেক সময় ঘটেছে, তবে এবারের আন্দোলন অন্যভাবে উদ্ভূত হয়েছে। কর্মকর্তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি নজর দেওয়া জরুরি। দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশের পল্লী বিদ্যুতের এই পরিস্থিতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপরেও নির্ভরশীল। সকল অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা এবং সমঝোতা প্রয়োজন। যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো ধরনের ব্যাঘাত না ঘটে এবং গ্রাহকরা সেবা পাবেন।
সবশেষে, এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি কর্মকর্তারা তাদের কাজ করতে পারেন, তবে বিদ্যুৎ সরবরাহও স্বাভাবিক থাকবে। দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।
বাংলা নিউজ বিডি হাব/ রনি মিয়া