আজ বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, দুপুর ১২টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর সাথে অন্যান্য কমিশনাররাও পদত্যাগ করেছেন। এই পদত্যাগের ঘোষণার পর কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে যাবেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে, বেলা ১১টায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সৌজন্য বিনিময়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে কমিশনের সকল কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করেন কমিশন সদস্যরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এই অনুষ্ঠানে বলেন, “আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সকলেই পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছি। আমরা পদত্যাগপত্র সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সেগুলো জমা দেবেন।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এছাড়া, ইসির সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এবং সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান। তাঁরা নিয়োগের একদিন পর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে শপথ নেন।
এরপর, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পর নির্বাচন কমিশনাররা পদত্যাগ করেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর, ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন এই নির্বাচন কমিশন মাত্র আড়াই বছরেই বিদায় নিয়েছে, যদিও তাদের পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব ছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে, সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্যান্য কমিশনারদের পদত্যাগের ঘোষণার পর, কমিশন এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইডিকার্ড ছাড়া ভিতরে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও, নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা এবং আনিছুর রহমান নির্বাচন ভবনে তাদের নিজ নিজ দফতরে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল তাঁর বক্তব্যে বলেন, “দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তিনি নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন এবং দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার কিছু প্রস্তাবনাও দেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, নির্বাচন কমিশন একটি নতুন সংস্কারের পথে অগ্রসর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ায় এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা বিতর্কের পর এই পদত্যাগ ঘটেছে।
বর্তমান কমিশনের পদত্যাগের পর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।