ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০ অক্টোবর, রোববার, জোহরের নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এই জানাজার আয়োজন করা হয়। জানাজার ইমামতি করেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম।

জানাজায় বক্তব্য রাখার সময় জাহিদুল ইসলাম বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা ও গণহত্যা দেখে আরব বিশ্বের নীরবতা মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন যদি দখল হয়, তবে এর বিপদ কেবল ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশকেই ভোগ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো নিজেদের মানবতার রক্ষক দাবি করে, অথচ ফিলিস্তিনে গণহত্যায় তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে। এটির মাধ্যমে তাদের দ্বিচারিতা প্রকাশ পায়। জাহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ইসরায়েল নারী, শিশু ও নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে, তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষদের আটকে রেখেছে। গাজার ওপর অবরোধের কারণে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না এবং শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে। জাতিসংঘ ও ওআইসির নীরবতা ফিলিস্তিনিদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।

হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বীরত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, শহীদ সিনওয়ার ফিলিস্তিনের অধিকার রক্ষায় সাহসিকতা এবং দৃঢ়তার এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন। তিনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে শহীদ হয়েছেন, যা সত্যিকার বীরের লক্ষণ।

জাহিদুল ইসলাম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এই সংকট সমাধানে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন এবং বলেন, জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেছেন, এজন্য তাকে সাধুবাদ জানানো হচ্ছে। তবে, তিনি বলেন, বক্তৃতার মাধ্যমে কিছুই হবে না; মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সরকারপ্রধানদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জানাজায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েটের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন, যারা নানা দায়িত্বে কর্মরত। তারা এই অনুষ্ঠানকে সফল করতে সহায়তা করেছেন।

এই ঘটনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সমর্থন জানানো এবং তাদের মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এটি ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি একাত্মতা প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।