আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, এবং কারওয়ান বাজারসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় দুই ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন প্যাডেল চালিত রিকশাচালকরা। তাঁরা বৈদ্যুতিক রিকশা বন্ধ করার দাবিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।

বিক্ষোভকারীরা সকাল ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা রাস্তা ছেড়ে দেন, তবে তাঁদের দাবিগুলো পূরণ না হলে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।

বর্তমানে ঢাকার সড়কে বৈদ্যুতিক রিকশার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। গত ১৫ মে সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সময় সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য বৈদ্যুতিক রিকশার চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর পুলিশের অভিযান শুরু হলে বৈদ্যুতিক রিকশাচালকরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেন। পরে ২০ মে থেকে ঢাকা শহরে বৈদ্যুতিক রিকশার চলাচল পুনরায় অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্যাডেল চালিত রিকশাচালকদের প্রধান দাবিগুলো হলো:

১. রিকশাচালকদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সহায়তা: স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মারা যাওয়া রিকশাচালকদের তালিকা প্রকাশ এবং তাঁদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে।

২. শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি: বাংলাদেশের রিকশাচালকদের যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতির আদলে শ্রমিক হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

৩. স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা: রিকশাচালকদের স্বাস্থ্যসেবা, ছেলেমেয়েদের শিক্ষা, এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. অনুপ্রবেশ বন্ধ করা: এই সেক্টরে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে এবং কাজের সময় নির্ধারণ করতে হবে।

৫. বয়সে পুনর্বাসন: বয়স্ক চালকদের দ্রুত পুনর্বাসনের আওতায় আনতে হবে।

৬. পার্কিং ও বিশ্রামাগার: রাস্তার মোড়ে রিকশাচালকদের জন্য পার্কিং ও বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করা: ট্রাফিক পুলিশের শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং শপিংমল ও বাজারের দারোয়ানদের বাজে আচরণ বন্ধ করতে হবে।

৮. অটোরিকশা বন্ধ: দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অটোরিকশা আগের নির্ধারিত এলাকায় চলবে।

৯. রাস্তা মেরামত: রাস্তার বামপাশ ভালোভাবে মেরামত করতে হবে।

১০. রেকর্ড সংস্কার: স্বাধীন দেশ সংস্কার কাজে রিকশাচালকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে এবং তাঁদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।

শাহবাগের বিক্ষোভের পর, আন্দোলনরত রিকশাচালকরা ৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন রিকশা মালিক ঐক্যজোটও কিছু দাবি তুলেছে:

  • নতুন লাইসেন্স প্রদান: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মতো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে নতুন লাইসেন্স প্রদান এবং পুরাতন লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।
  • চালক লাইসেন্স: বৈধ লাইসেন্সধারী রিকশা চালকদের চালক লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
  • মেডিকেল সহায়তা: অসুস্থ চালকদের ফ্রি চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।
  • ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স: লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিকশাচালকদের ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
  • বাঙালি বাহনের মর্যাদা: রিকশাকে ঢাকার প্রাচীন বাহনের মর্যাদা দিয়ে জাতীয় জাদুঘরে স্থান দিতে হবে।
  • দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন: দুর্নীতিবাজদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • অবিশ্বাস্য রিকশা বন্ধ করা: বিশেষ পোশাকে রিকশা বন্ধ করে বৈধ প্যাডেল রিকশার চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।

[helpie_faq group_id=’178’/]