শ্রীলঙ্কায় আগামী ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দুই বছর আগে অর্থনৈতিক সংকটে দেশটি দেউলিয়া ঘোষণা হওয়ার পর এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে ৩৮ জন, তবে দুঃখজনকভাবে কোনো নারী প্রার্থী নেই। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন দেশটির ভবিষ্যৎ এবং সংস্কারের পথ নির্ধারণ করবে।

২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে গোতাবায়া রাজাপক্ষে হারেন। এবার তিনি আবারও নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে আছেন। অনেক পরিবর্তনপ্রিয় ভোটার অনুরা কুমারা দিসানায়েককে সমর্থন করছেন। তিনি একজন বামপন্থী নেতা এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন।

অন্যদিকে, রাজাপক্ষে পরিবারের সদস্য নমল রাজাপক্ষেও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে‘র ছেলে এবং এই পরিবারকে নিয়ে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। গোতাবায়া রাজাপক্ষে ক্ষমতা হারানোর পর প্রথমবারের মতো ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়া হবে। বর্তমানে ক্ষমতায় আছেন রনিল বিক্রমাসিংহে, যিনি গোতাবায়ার পদত্যাগের পর দায়িত্ব নিয়েছেন।

শ্রীলঙ্কার জনগণ উল্লসিত, কারণ তারা এবার নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন যে তারা দুর্নীতির হাত থেকে মুক্তি পেতে চান। তবে, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দ্রব্যমূল্য এখনো বেশ উঁচু। এই পরিস্থিতি নিয়ে জনগণের মধ্যে হতাশা রয়েছে।

রাজাপক্ষে পরিবারের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও জনগণের ক্ষোভ তাদের উপর রয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে ৩৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তবে সাজিথ প্রেমাদাসা‘র বিজয়ের সম্ভাবনা বেশি। রনিল বিক্রমাসিংহে নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করছেন, তবে তার জয়লাভের সম্ভাবনা কম বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনুরা কুমারা দিসানায়েকের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে, এবং তার বামপন্থি দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে অনেক ভোটার সমর্থন জানাচ্ছেন।

এবারের নির্বাচনে অর্থনীতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শ্রীলঙ্কায় ভর্তুকি কমেছে, মানুষের আয় হ্রাস পেয়েছে এবং কর বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ এবং ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ

গত বছরের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কার জনগণ ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে। এই পরিস্থিতিতে গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। পরে তিনি পদত্যাগ করেন এবং ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিক্রমাসিংহে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।