গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষণীয় ছিল। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের চারটি কার্যদিবসের মধ্যে তিনটি দিনই শেয়ারবাজারের মূলধন ও মূল্যসূচক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এ শেয়ারদরের ঊর্ধ্বগতি বেশ চোখে পড়েছে।

খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের সাফল্য

গত সপ্তাহে সবচেয়ে বড় উত্থান দেখা গেছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ারে। কোম্পানিটির শেয়ারদাম ২৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়েছে, যা প্রতিটি শেয়ারে ২৩ টাকা ৪০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কোম্পানির মোট শেয়ারদাম বেড়েছে ২২৯ কোটি ৫০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১০৪ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা ৮০ পয়সা।

তবে, খন ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ গত কয়েক বছরে বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করেনি। সর্বশেষ ২০২২ সালে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল এবং এর আগেও ২০২০ ও ২০১৮ সালে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে।

সাম্প্রতিক বাজারের চিত্র

বাজার বিশ্লেষকরা জানান, গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারের পিই রেশিও ১.৫৩ শতাংশ বেড়ে ১১.২৮ পয়েন্টে পৌঁছেছে। পিই রেশিও যত বেশি, বিনিয়োগ ঝুঁকি তত বেশি। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক হতে পারেন। তবে, দেশের শেয়ারবাজারে বর্তমানে শেয়ারদরের নীচে অবস্থান থাকায় অনেক শেয়ার এখন ঝুঁকিমুক্ত।

ডিএসইর মূল্যসূচক ও বাজার মূলধন

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে ১০৪.৫০ পয়েন্ট বা ১.৮৩ শতাংশ বেড়েছে। আগের সপ্তাহে সূচকটি ২০৩.৯২ পয়েন্ট বা ৩.৪৫ শতাংশ কমেছিল। এ ছাড়াও, ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৩৪ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা ১.৬৩ শতাংশ এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ২২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা ১.৮২ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে গড় লেনদেনের পরিমাণ ২৬.৯৩ শতাংশ বেড়ে দৈনিক গড় লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৭৯২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং গ্রামীণফোন শীর্ষ লেনদেনকারীর মধ্যে ছিল।

বাজারের ভবিষ্যৎ ভাবনা

গত সপ্তাহের বাজার উন্নতির পর, আগামীর বাজার চিত্র কেমন হবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম দুই সপ্তাহ শেয়ারবাজারে দরপতনের শিকার হয়েছিল, তৃতীয় সপ্তাহে উত্থানের দেখা মিলেছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে বাজারের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রভাব, পিই রেশিও এবং কোম্পানির পারফরম্যান্স মূল ভূমিকা রাখতে পারে।