হঠাৎ করে যদি আপনার রক্তচাপ বেড়ে যায়, এটি একটি গুরুতর অবস্থা হতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণে রক্তচাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পেতে পারে, যেমন মানসিক চাপ, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন, অথবা কোনো শারীরিক সমস্যা। এ নিবন্ধে আমরা হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো এবং আপনি কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারেন তা আলোচনা করব।
উচ্চ রক্তচাপ কী?
উচ্চ রক্তচাপ, যাকে হাই ব্লাড প্রেশারও বলা হয়, হচ্ছে সেই পরিস্থিতি যেখানে আপনার ধমনীর মধ্যে রক্তের চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার পারদ চাপ থাকে। যদি আপনার রক্তচাপ ১৪০/৯০ মিলিমিটার পারদ চাপ বা তার বেশি হয়, তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়।
হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয়
১. বিশ্রাম নিন: হঠাৎ করে রক্তচাপ বেড়ে গেলে প্রথমত বিশ্রাম নিন। একটি শান্ত পরিবেশে বসে থাকুন বা শুয়ে পড়ুন।
২. ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন: মাথা বা ঘাড়ে ঠান্ডা পানি বা বরফ দিয়ে আরাম পাওয়ার চেষ্টা করুন, যদিও এটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য নাও করতে পারে।
৩. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস: সুষম খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা, টমেটো ইত্যাদি।
৪. ওষুধ সেবন: যদি আপনি নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেয়ে থাকেন, তবে সেটি ঠিক সময়ে গ্রহণ করুন। কখনও ভুলে গেলে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে ফেলুন।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
উচ্চ রক্তচাপের সাধারণত কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা না দিলেও কিছু উপসর্গ হতে পারে যেমন:
- মাথাব্যথা
- মাথা ঘোরা
- বুক ধড়ফড় করা
- দৃষ্টির ঝাপসা হওয়া
- অস্থিরতা
উচ্চ রক্তচাপের কারণ
উচ্চ রক্তচাপের নানা কারণ থাকতে পারে। সাধারণ কারণগুলো অন্তর্ভুক্ত:
- অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস
- অতিরিক্ত লবণ বা চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া
- মানসিক চাপ
- শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
কী খাবেন এবং কী খাবেন না
- খাবার: প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, এবং ছোট মাছ খান। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা, ডাবের পানি, টমেটো খান।
- খাবার এড়িয়ে চলুন: কাঁচা লবণ, চর্বিযুক্ত খাবার, প্যাকেটজাত খাবার এবং অতিরিক্ত ভাত পরিহার করুন। ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
যদি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রক্তচাপ মাপা নিয়মিতভাবে করা উচিত, বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস রয়েছে তাদের জন্য।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
- নিয়মিত ব্যায়াম: দিনে অন্তত ৩০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ করুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন কমানোর চেষ্টা করুন যদি প্রয়োজন হয়।
- মানসিক চাপ কমান: দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করুন।