থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে শুক্রবার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেন পেতংথার্ন শিনাওত্রা , যিনি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী। থাইল্যান্ডের রাজনীতি সম্প্রতি একটি বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশে নতুন সংসদ নির্বাচিত করেছে এর ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সি প্রধানমন্ত্রী, পেতংথার্ন শিনাওত্রাকে। এটি স্রেত্থা থাভিসিনের অপসারণের কয়েকদিন পরের ঘটনা। কিন্তু কেন স্রেত্থা থাভিসিনকে সরানো হয়েছে এবং পেতংথার্ন শিনাওত্রা কে?
পেতংথার্ন শিনাওত্রা: পরিচিতি ও রাজনৈতিক জীবন
পেতংথার্ন শিনাওত্রা, ৩৭ বছর বয়সী, থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী শিনাওয়াত্র পরিবারের কন্যা। তার বাবা, থাকসিন শিনাওয়াত্র, ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন এবং পরে ২০০৬ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অপসারিত হন। তার চাচী, ইংলাক শিনাওয়াত্র, ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী হন এবং ২০১৪ সালে একটি আদালতের রায়ে তিনিও অপসারিত হন।
পেতংথার্ন শিনাওত্রার শিক্ষাগত পটভূমি চমকপ্রদ। তিনি চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারে থেকে আন্তর্জাতিক হোটেল ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে, তিনি তার পরিবারের ব্যবসা পরিচালনায় সহায়ক ছিলেন।
রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পাএটংটর্ণ শিনাওয়াত্র থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী, এবং শিনাওয়াত্র পরিবারের তৃতীয় সদস্য যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০২১ সালে, যখন তিনি প্যু থাই পার্টির ইনক্লুশন এবং ইনোভেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির প্রধান হন। ২০২৩ সালের নির্বাচনে, তিনি দলের প্রার্থি হিসেবে নির্বাচিত হন।
নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেতংথার্ন শিনাওত্রা সামনে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। থাইল্যান্ডের অর্থনীতি বর্তমানে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে এবং তার দলের জনপ্রিয়তাও কম। তার প্রধান লক্ষ্য হবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি করা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করা।
পেতংথার্ন শিনাওত্রার অঙ্গীকার
পেতংথার্ন শিনাওত্রা নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বলেছেন যে তিনি থাইল্যান্ডের জনগণের জীবনমান উন্নত করতে এবং দেশের ভবিষ্যৎ গড়তে তাঁর সাধ্যমত চেষ্টা করবেন। তার অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে, ব্যাংককের পাবলিক ট্রান্সপোর্টের ভাড়া কমানো, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ এবং দৈনিক মজুরি দ্বিগুণ করা।
থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধান মত্রী স্রেত্থা থাভিসিনের অপসারণের কারণ
থাইল্যান্ডের সংবিধান আদালত এই বছরের শুরুতে স্রেত্থা থাভিসিনকে অপসারণের জন্য একটি আবেদন গ্রহণ করে। ৪০ জন সিনেটরের পক্ষ থেকে এই আবেদন করা হয়। তাদের অভিযোগ ছিল যে স্রেত্থা থাভিসিন একটি নৈতিক ও আদর্শিক দৃষ্টিকোণ থেকে অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে, তিনি একটি প্রাক্তন আইনজীবী পিচং চুয়েনবানকে মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দেন, যিনি ২০০৮ সালে আদালতের অবমাননার জন্য ৬ মাস জেল খেটেছিলেন। এই নিয়োগকে বেআইনি ও অর্থের মাধ্যমে হয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়।