১৫ বছর আগে পিলখানায় ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত খুব শিগগিরই শুরু হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে বিজিবি সদর দপ্তর পরিদর্শনের সময় এই কথা বলেছেন। তিনি জানান, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যে দুঃখজনক ঘটনা রয়েছে, তা যেন পুনরায় না ঘটে, সে জন্য দ্রুত তদন্ত করা হবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তখনকার বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে বিপথগামী কিছু সদস্য বিদ্রোহ করে। তারা দাবিদাওয়া আদায়ের নামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায়। এই ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং মোট ৭৪ জন মানুষ প্রাণ হারান। ঘটনা আন্তর্জাতিকভাবে আলোড়ন তোলে এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এখন, ১৫ বছর পর, এই ঘটনার পুনঃতদন্ত শুরু হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, এটা আমাদের জন্য খুবই জরুরি। তিনি মনে করেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে, কিন্তু আরো উন্নতির প্রয়োজন। তিনি বলেন, “যদি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, তবে বলব যে সন্তোষজনক, কিন্তু এটি আরো ভালো হতে হবে।”
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চোরাচালান বন্ধ রাখতে আমাদের সবার চেষ্টা করতে হবে। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই ক্ষেত্রে তাদের কঠোর নজর রাখতে হবে।
এদিকে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে, একটি হত্যা মামলায় এবং অন্যটি বিস্ফোরক আইনে। হত্যা মামলায় কিছু সদস্য খালাস পেয়েছেন, তবে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ বিডিআর সদস্য এখনও মুক্তি পায়নি। এই পরিস্থিতিতে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
এখন পিলখানার হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে জনগণের মধ্যে একটি আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে এবং মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ তৈরি করতে হবে।
আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। আমরা যদি একসাথে কাজ করি, তবে আমরা নিশ্চয়ই একটি নিরাপদ এবং সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে পারব। আমাদের সকলের উচিত এই বিষয়ে সজাগ থাকা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করা।
এই ঘটনার পুনঃতদন্তের মাধ্যমে যাদের ক্ষতি হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে ন্যায় বিচারের আশা তৈরি হবে। এটি শুধু তদন্তের জন্য নয়, বরং আমাদের সমাজের জন্য একটি শিক্ষা, যাতে আমরা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না দেখি।
নিশ্চয়ই, সকলেরই একসাথে কাজ করার সময় এসেছে। যদি আমরা সকলে এক হয়ে কাজ করি, তবে আমাদের দেশ নিরাপদ হবে। আমরা চাই, আমাদের সন্তানরা নিরাপদে বেড়ে উঠুক। আমাদের উচিত একটি সুরক্ষিত ভবিষ্যতের দিকে নজর দেওয়া।
বিজিবির সদস্যদের নিরাপত্তা এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা যদি এই উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাই, তবে আমাদের সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।
বাংলা নিউজ বিডি হাব/ জাকির হাসান