বাংলাদেশে মানবাধিকারের অবস্থার উন্নতির জন্য একটি নতুন উদ্যোগ শুরু হতে যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ঢাকায় একটি অফিস চালু করতে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এই অফিস চালু হলে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সরাসরি তদন্ত করা সম্ভব হবে। এতে করে আমরা আমাদের সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ পাব।

শারমীন এস মুরশিদ, যিনি সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা, তিনি বলেন, “এটি একটি খুব বড় সিদ্ধান্ত। এই অফিস আমাদের জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসবে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রগুলোতে তারা সরাসরি তদন্ত করতে পারবেন, যা আমাদের জন্য একটি বড় আশ্বাস।

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান, ফলকার টুর্ক, দুই দিনের সফরে এসেছেন। প্রথম দিনে তিনি সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সাথে আলোচনা করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক করবেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অফিসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ঢাকায় এই অফিসটি হবে সপ্তদশ দেশ হিসেবে। বর্তমান সময়ে ১৬টি দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস রয়েছে, যেমন—বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, চাদ, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, গিনি, হন্ডুরাস, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মেক্সিকো, নাইজার, ফিলিস্তিন ও সিরিয়া।

এই অফিসের উদ্দেশ্য হলো মানবাধিকার সুরক্ষা এবং প্রসার ঘটানো। এতে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা হবে। এটি বাংলাদেশের সরকার, নাগরিক সমাজ, ভিকটিম এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে।

শারমীন মুরশিদ আরও জানান, “এই অফিসের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে হবে।” তিনি বলেন, “যখন আমরা নাগরিক সমাজ থেকে সত্যটা তুলে ধরি, তখন আমাদের ওপর নির্যাতন আসে।”

মানবাধিকার অফিসের কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে তিনি বলেন, “মানবাধিকারের জাতিসংঘ অফিস থাকা মানে আমাদের জন্য একটি শক্তিশালী সহায়তা আসবে।”

বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, “আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো কী এবং আমরা বর্তমান অবস্থাটা কীভাবে দেখছি।” এতে তারা নিজেদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং কীভাবে জাতিসংঘ তাদের সাহায্য করতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনা হয়।

এভাবে, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস চালু হলে আমাদের দেশের মানবাধিকারের অবস্থা অনেকটাই উন্নত হবে। এটা শুধু সরকারের জন্য নয়, বরং সবার জন্যই একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে। আমরা আশা করছি, এই উদ্যোগ আমাদের দেশে মানবাধিকারের মানসিকতা আরও শক্তিশালী করবে।

মানবাধিকারের বিষয়ে আমাদের সবার সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে যাতে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া যায়। এই অফিসের কার্যক্রম সফল হলে, আমরা দেখতে পাবো যে মানবাধিকারের মানসিকতা এবং পরিবেশ বাংলাদেশে কিভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে।