বাংলাদেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে একটি নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে। সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলগুলোতে আগামী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে লটারির মাধ্যমে। অর্থাৎ, এবার ভর্তি পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আসুন, আমরা এই প্রক্রিটি বিস্তারিতভাবে জানি।
ভর্তি প্রক্রিয়া এবং লটারি
প্রতিবছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে পরবর্তী বছরের ভর্তির কাজ শুরু হয়। জানুয়ারি মাসে ক্লাস শুরু হয়। আগে শুধু প্রথম শ্রেণির ভর্তি লটারির মাধ্যমে হতো, কিন্তু করোনার সময় পুরো প্রক্রিয়াটি পরিবর্তিত হয়। ২০২১ সালে, সব শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে এ পদ্ধতি চালু রয়েছে।
এবারও একইভাবে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম হবে। প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো ভর্তি পরীক্ষা হবে না। ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে চলতি বছরের নভেম্বরে। লটারির মাধ্যমে যাদের নির্বাচিত করা হবে, তারা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নতুন বই নিয়ে ক্লাস শুরু করবে।
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সভা
এ বিষয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খ ম কবিরুল ইসলাম। এই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে লটারির মাধ্যমে ভর্তি হবে এবং পরবর্তী বছর ২০২৬-এর ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভর্তির নীতিমালা
সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে গত এক যুগ ধরে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে আসছে। তবে, কিছু প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে যে, লটারির পরিবর্তে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি করা উচিত। তাদের দাবি পর্যালোচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে। সেখানেই লটারির পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দাবি
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবকরা পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা যাচাই করে শিক্ষার্থী ভর্তি করার দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হলে তা শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
লটারির নিয়মাবলী
লটারির পদ্ধতি পরিচালনা করতে কিছু নিয়মাবলী থাকবে। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে এবং লটারির ফলাফল প্রকাশের পর তাদের ভর্তি হতে হবে। এর ফলে, যারা যোগ্য তাদের ভর্তি হবে এবং এটি একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া হবে।
স্কুলে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা
ভর্তি প্রক্রিয়ায় লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হলে এটি অনেকের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করবে। বিশেষ করে, যারা ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে পারছে না তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। লটারি প্রক্রিয়া সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৬ সালের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর মানে, আগামী বছর হয়তো লটারি না হয় পরীক্ষা, কিছু পরিবর্তন হতে পারে। সেক্ষেত্রে, সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে, শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে নির্বাচিত করা হবে।
শেষ কখা
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া অনেক পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি সুযোগ, যা তাদের লেখাপড়ার পথে এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে। এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে নতুন নিয়মাবলীর জন্য এবং দেখার জন্য, এই প্রক্রিয়া কিভাবে কার্যকরী হবে।