ঢাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি সহিংস সংঘর্ষে অনিচ্ছাকৃতভাবে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ২৬ আগস্ট, সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন আনসার সদস্যদের দ্বারা হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম মন্তব্য করেন যে, দেশের শাসনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং ফ্যাসিজমের সহায়ক শক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া প্রয়োজন।

হামলার বিবরণ

সারজিস আলম জানান, আনসার সদস্যদের হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং ২০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে দুজন গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। হামলায় অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সিএমএইচে স্থানান্তরিত হয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, এই হামলার পেছনে আওয়ামী লীগের সহায়তায় চাকরি পাওয়া আনসার সদস্যরা দায়ী।

সরকারের অবস্থান

সারজিস আলম বলেন, নতুন সরকারের জন্য কয়েক মাস সময় প্রয়োজন হবে ফ্যাসিস্ট প্রশাসনের সব স্তর থেকে দুর্নীতিবাজদের সরিয়ে দিয়ে একটি সুষ্ঠু প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি আরও জানান, ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

আনসার সদস্যদের বিক্ষোভ

বিক্ষোভকারীরা চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে গত রবিবার ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। তাদের সংখ্যা বিকেলে প্রায় দশ হাজারে পৌঁছায় এবং সচিবালয় ঘেরাও করে রাখে। জরুরি বৈঠকের মাধ্যমে আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়, যার মধ্যে রেস্ট প্রথা বাতিল করার সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পরে আরও কয়েক ঘণ্টা অবরোধ অব্যাহত রাখে, যা সহিংস সংঘর্ষে পরিণত হয়।

বিচার এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপ

সংঘর্ষের পর ৩৫০ জনেরও বেশি আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ছয় সেনা সদস্য আহত হয়েছেন। অবরোধের সময় আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সহিংস আক্রমণের অভিযোগ ওঠেছে, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কাল নিয়ে কিছুটা ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, নতুন সরকারের অধীনে একটি কার্যকর ও জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে কিছু সময় লাগবে।