বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। নির্বাচনের জন্য অনেক কাজ করতে হবে। যেমন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নির্বাচনি মালামাল সংগ্রহ করা। এসব কাজ করা অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, যদি সবকিছু দ্রুত করা যায়, তাহলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করা সম্ভব।
নির্বাচন কমিশন নতুন নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করতে পারবে। সাধারণত, তফশীল ঘোষণার ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ হয়। তাই, সরকার চাইলে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন করতে পারে। কিন্তু সবকিছুর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। কারণ, দেশের সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনতে দুটি কমিশন কাজ করছে। তারা যে প্রস্তাব দেবে, সেগুলো অনুসারে নির্বাচন প্রস্তুতির কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে অনেক সময়ের জন্য শ্রম অভিবাসন বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য এই প্রক্রিয়া এখনো বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে অন্তত ১৩টি দেশে শ্রম অভিবাসন স্থগিত রয়েছে। দেশগুলো হলো: ওমান, বাহরাইন, ইরাক, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, মিশর, আরব আমিরাত, রোমানিয়া, ব্রুনাই, মরিশাস, ইতালি এবং মালদ্বীপ।
শ্রম অভিবাসন বন্ধ হওয়ার কারণগুলোতে রয়েছে অনিয়ম এবং অন্যান্য সমস্যা। সরকার বলেছে, তারা এই বাজারগুলো পুনরায় চালু করতে চেষ্টা করছে। কিন্তু এটি একপেশে বিষয় নয়। গন্তব্য দেশগুলোও তাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশে শ্রম অভিবাসন বন্ধ থাকায় দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। কারণ, বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ। যদি রেমিট্যান্স কমে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়বে।
নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে, নির্বাচন কমিশন এখনো গঠন হয়নি। সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার শুধু কমিশনের। নির্বাচন কমিশন গঠন হলে, তারা সঠিকভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নেবে। কমিশন গঠনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্চ কমিটি হতে যাচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
নতুন কমিশন গঠনের জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। নতুন কমিশন গঠনের পর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। এরপর ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই তালিকার ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের জন্য সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রয়োজন। এসব কাজ একসঙ্গে করলে সময় লাগবে ৩ থেকে ৫ মাস। নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে এক মাসের সময় দেওয়া হবে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করতে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগবে।
নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলেছেন, নির্বাচনি মালামাল সংগ্রহ করতেও ৩ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হলে, তখন সময় বেশি লাগবে। সব মিলিয়ে, যদি সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকে, তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচন সফলভাবে আয়োজিত হতে পারে।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো, তারা যাতে সুষ্ঠু ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারে। আমাদের উচিত রাজনৈতিক দলগুলোকে চাপ দেওয়া, যেন তারা নির্বাচনের সঠিক রোডম্যাপ তৈরি করে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে।
বাংলাদেশের উন্নতির জন্য জনগণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সবার সহযোগিতায় আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন করতে পারব, যা আমাদের ভবিষ্যতকে আলোকিত করবে।
বাংলা নিউজ বিডি হাব/ জহিরুল ইসলাম