বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল আবারও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি জিতে দেশে ফিরেছে। গতকাল নেপালের বিরুদ্ধে ফাইনালে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা নিশ্চিত করেছে। সাফ জয়ী এই দলের সদস্যরা আজ দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তরা।

অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বাংলাদেশের পতাকা কাঁধে নিয়ে দলকে নেতৃত্ব দেন, আর তহুরা আক্তার বারবার ক্যামেরার সামনে পতাকা উড়িয়ে উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি করেন। তাদের সাথে ছিলেন কোচ পিটার বাটলার, যিনি দলের সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

বিমানবন্দর থেকে সাফজয়ী দলটি বিশেষ ছাদ খোলা বাসে করে বাফুফে ভবনে যাচ্ছেন। সেখানে সমর্থকরা এবং সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিকেলে চ্যাম্পিয়ন দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস নারীদের বিশেষ সংবর্ধনা দেবেন।

এই চ্যাম্পিয়নশিপের আগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সরকারের সহযোগিতায় বিশেষভাবে প্রস্তুত একটি বাসের ব্যবস্থা করেছিল। আগেরবারের অভিজ্ঞতা থেকে এবার বিআরটিসি দুইটি ছাদ খোলা বাস প্রস্তুত করেছে। এসব বাসের ডিজাইনে চ্যাম্পিয়ন দলের ছবি, ট্রফি এবং সেরা খেলোয়াড়দের মুহূর্তগুলো স্থান পেয়েছে।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আবারও বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন ইতিহাস গড়েছে। ২০২২ সালে তারা প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল এবং তখনও তাদের বরণ করে নিতে দেশের মানুষ ব্যাপক উৎসাহ দেখিয়েছিল। এবারও সেই উৎসাহ ও উদ্দীপনা প্রতিফলিত হচ্ছে।

এবারের বিজয়ের উৎসব শুধু উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না; নারী ফুটবলারদের অধিকার নিয়েও সচেতন হওয়া উচিত। মেয়েদের বকেয়া বেতন ও ম্যাচ ফির টাকা সঠিকভাবে পরিশোধের উদ্যোগ নিতে হবে। পারফরম্যান্স ও সাফল্যের জন্য যথাযথ সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। নাহলে, উদযাপন এবং উল্লাসের আনন্দ নষ্ট হবে।

এভাবে, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল নতুন ইতিহাস রচনা করলো। সবার সমর্থন ও সহযোগিতায় ভবিষ্যতে তারা আরও সাফল্য অর্জন করতে পারবে। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের অবস্থান মজবুত করার জন্য এই সাফল্য একটি মাইলফলক।

সারা দেশের মানুষকে নিয়ে এবার চ্যাম্পিয়নদের বিজয়ের আনন্দ আরও একবার ভাগাভাগি করা উচিত। ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, এটি দেশের মানুষের মধ্যে আবেগ, আশা ও স্বপ্নের প্রতীক। এই সাফল্য ধরে রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় বড় অর্জন সম্ভব হয়।