প্রতিদিন দই খেলে কি হয় অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, প্রতিদিন খাওয়া ভালো না খারাপ, অনেকে দ্বিধা-দন্ধে ভোগে। আজকে আমরা জানব যে প্রতিদিন দই খাওয়া ভালো না খারাপ। ভাল দিক এবং খারাপ দিক, আর কোন খাওয়া ভালো আর কোন দই খাওয়া খারাপ।

দই হলো একটি স্বাস্থ্যকর দুগ্ধজাত খাবার যা দুধে গাঁজন করে তৈরি করা হয়। এটি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি এবং প্রোবায়োটিকের একটি সমৃদ্ধ উৎস। দই তৈরিতে যে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয় তাকে ইয়োগার্ট কালচার বলা হয়। আজ আমরা জানব, প্রতিদিন দই খাওয়ার কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা।

প্রতিদিন দই খেলে কি হয় – দইয়ের পুষ্টিগুণ

দইয়ে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো নিম্নরূপ:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ (প্রতি ২০০ গ্রাম দই)
প্রোটিন১০-১২ গ্রাম
ক্যালসিয়াম২৫০-৩০০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি-২০.২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি-১২১.৫ মাইক্রোগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম২৫-৩০ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম৩৫০-৪০০ মিলিগ্রাম

দই খাওয়ার উপকারিতা

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

দই নিয়মিত খেলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন দই খান, তাদের সর্দি হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। এটি প্রোবায়োটিক ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

২. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে

দইয়ের প্রোবায়োটিক এবং পুষ্টি হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। গবেষকদের মতে, যারা প্রতিদিন দই খান, তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৩০% পর্যন্ত কমে যায়।

৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতি সপ্তাহে তিনবারের বেশি দই খান, তারা তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে ভালোভাবে সক্ষম হন। দইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া ক্ষুধা কমায় এবং শক্তি প্রদান করে।

৪. হাড়ের স্বাস্থ্য শক্তিশালী করে

দই ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর একটি ভালো উৎস, যা হাড়ের স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত দই খেলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমে যায়।

৫. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

দই খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর সম্ভবনা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি চর্বিহীন দই খায়, তাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি ৩১% কম।

দইয়ের ত্বক ও চুলের উপকারিতা

দই শুধু শরীরের জন্যই নয়, ত্বক ও চুলের জন্যও উপকারী। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্ক ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে নিরাময় করে। দই দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং মৃত কোষ দূর করতে সহায়ক।

প্রতিদিন দই খাওয়ার উপকারিতা অগণিত। এটি হজমে সহায়তা করে, শরীর সতেজ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। দইয়ের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে দইকে রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। তাই, সুস্থ থাকতে চাইলে প্রতিদিন এক বাটি দই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।