আমি রনি মিয়া আছি আজকের আরটিকেলে, পাগল বললে কি মামলা করা যাই? পাগল বললে মানহানির মামলা করতে পারো। দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় মানহানির সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলি বা চিহ্নাদি বা দৃশ্যমান প্রতীকের সাহায্যে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে এমনভাবে কোনো নিন্দা প্রণয়ন বা প্রকাশ করে, তাহলে ওই ব্যক্তির মানহানি হয়েছে মর্মে গণ্য হবে।

বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৩২৪ ধারা অনুযায়ী, “যে ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে পাগল বলে অপবাদ দেয়, সে অপরাধী হবে এবং অনূর্ধ্ব ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।”

মানহানি মামলা হল এমন একটি মামলা যেখানে একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির সম্মান বা খ্যাতি নষ্ট করার জন্য একটি অপবাদ বা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়।

বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুযায়ী, “যে ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির সম্মান বা খ্যাতি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে বা এমন হবে জেনেও উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলি বা চিহ্নদি বা দৃশ্যমান প্রতীকের সাহায্যে কোন ব্যক্তি সম্পর্কে এমনভাবে কিছু বলে বা প্রকাশ করে, তাহলে সেই ব্যক্তি অপরাধী হবে এবং দুই বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।”

মানহানির মামলার কিছু উদাহরণ হল:

  • আপনাকে উদ্দেশ্য করে নিয়মিত পাগল বলা।
  • একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে চোর বলে অপবাদ দেয়। যদি সে চুরি না করে থাকে।
  • জঙ্গি বলে অপবাদ দিলে, একজন ভালো মানুষকে।
  • একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে দুর্নীতিবাজ বলে অপবাদ দেয়। যদি সে এই সম্পর্কে লিপ্ত না হয়। 
  • একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে ধর্ষক বলে অপবাদ দেয়। এছাড়াও আরো অনেক উদাহরন আছে। 

মানহানির মামলা সাধারণত দুই ধরনের হয়:

  • ফৌজদারি মানহানি মামলা: এই ধরনের মামলায়, অপবাদকারীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুযায়ী মামলা করা হয়।
  • দেওয়ানি মানহানি মামলা: এই ধরনের মামলায়, অপবাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য মামলা করা হয়।

মানহানির মামলায়, অপবাদটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে কিনা তা প্রমাণ করতে হবে। অর্থাৎ, অপবাদকারীর উদ্দেশ্য ছিল ভিকটিমের সম্মান বা খ্যাতি নষ্ট করা। এছাড়াও, অপবাদটি এমন হওয়া উচিত যা ভিকটিমের সম্মান বা খ্যাতি নষ্ট করতে পারে।

মানহানির মামলায়, অপবাদকারীকে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। দেওয়ানি মানহানি মামলায়, আদালত ভিকটিমের ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করতে পারে।

মানহানির মামলায়, ভিকটিমকে নিম্নলিখিত প্রমাণাদি জমা দিতে হবে:

  • অপবাদকারীর নাম এবং ঠিকানা।
  • অপবাদটি কী ছিল। তার প্রমান জমা করা।
  • অপবাদটি কীভাবে এবং কখন করা হয়েছিল।
  • অপবাদটি ভিকটিমের সম্মান বা খ্যাতি নষ্ট করেছে।

মানহানির মামলা একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই, মামলা করার আগে একজন আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা উচিত।

মানহানির মামলা একটি গুরুতর অপরাধ। তাই, এ ধরনের অপরাধ থেকে বিরত থাকা উচিত। অন্যের সম্মান নিয়ে কখনও খেলবে না।